ইরানে পুলিশ স্টেশন সেনা ক্যাম্পে হামলার চেষ্টা, নিহত বেড়ে ১৬

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩৯ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৮

ইরানের সরকারবিরোধী বিক্ষোভের জেরে দেশটিতে অস্থিরতা বাড়ছে। অর্থনৈতিক দূরবস্থা ও জীবনযাত্রার মান নিয়ে ক্ষুব্ধ ইরানিদের টানা বিক্ষোভের পঞ্চমদিনে সোমবার বেশ কয়েকটি শহরের পুলিশ স্টেশন ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে হামলার চেষ্টা করেছে বিক্ষোভকারীরা।

বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, সোমবার রাতে পুলিশ স্টেশনে হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশটিতে চলমান বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে পৌঁছেছে।

তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, সোমবার রাতে পুলিশ স্টেশন ও সেনা ক্যাম্পে সশস্ত্র প্রতিবাদকারীদের হামলার চেষ্টা প্রতিরোধ করেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। চলমান বিক্ষোভের সবচেয়ে সহিংস এ ঘটনায় ১০ জন নিহত হয়েছে।

iran-clash

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিভিওতে দেখা যায়, কাহদেরিজান শহরের কেন্দ্রে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভকারীরা। এই বিক্ষোভ থেকে শহরের একটি পুলিশ স্টেশন দখলে নেয়ার চেষ্টা করে তারা। নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলেও ওই পুলিশ স্টেশনে অগ্নিসংযোগ করেছে উত্তেজিত জনতা।

রাতের এই বিক্ষোভে বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে কিছু গণমাধ্যম খবর দিয়েছে। মেহর নিউজ অ্যাজেন্সি বলছে, ইরানের পশ্চিমাঞ্চলের কেরমানশাহ শহরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশি তল্লাশি চৌকিতে আগুন দিয়েছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।

মঙ্গলবার তুরস্কের সংবাদ সংস্থা আনাদোলু বলছে, ইরানজুড়ে চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের এক কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ১৬ জন নিহত হয়েছে।

iran-clash

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ টানা পঞ্চম দিনে পৌঁছেছে। ২০০৯ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনেজাদ পুনর্নির্বাচিত হওয়ার প্রতিবাদে রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করে। ওই সময়ের পর এবারের সরকারবিরোধী এই বিক্ষোভকে বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। রোববার বিশৃঙ্খলায় অন্তত ১৩ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।

১৯৭৯ সালে ইসলামিক বিপ্লবের পর এই প্রথম দেশটির কোনো ক্ষমতাসীন সরকার ব্যাপক চাপে পড়েছে। রোববার প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইরানিদের সমালোচনা করার অধিকার আছে; তবে বিশৃঙ্খলা তৈরির নয়।

iran-clash

দ্রব্য মূল্য ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার দেশটির মাশাদ শহরে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যান্য শহরেও, রূপ নেয় রাজনৈতিক সমাবেশে।

বিক্ষোভের পেছনে বিদেশি শক্তি ও বিপ্লববিরোধীদের মদদ রয়েছে বলে দাবি করেছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন শহরে শত শত মানুষ বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি ও সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা অায়াতুল্লাহ আলী খামেনিবিরোধী স্লোগান দিয়েছেন।

এখন পর্যন্ত ৩৭৭ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী। শুধুমাত্র রাজধানী তেহরানে ২০০ জনকে এবং অন্যান্যদের আরাক, ইসফাহান, রোবাত, করিম ও পশ্চিম আজারবাইজান প্রদেশ থেকে গ্রেফতার করা হয়।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।