কোরীয় দ্বীপে যুদ্ধে প্রাণ যাবে ২০ লাখ মানুষের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৬ পিএম, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭

উত্তর কোরিয়া বলেছে, জাতিসংঘ তাদের ওপর সবশেষ যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তার যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। গত মাসে উত্তর কোরিয়া যে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়, তার শাস্তি হিসেবেই জাতিসংঘের এ নিষেধাজ্ঞা। কিন্তু সত্যি সত্যি যদি পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বেধে যায়- তা হলে কি ঘটবে?

দু'জন উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ এ নিয়ে কথা বলেছেন বিবিসির সঙ্গে। তারা তাদের অভিজ্ঞতা ও অনুমানের ভিত্তিতে কল্পনা করেছেন- এরকম একটি যুদ্ধে প্রথম কয়েক দিনে বা কয়েক সপ্তাহে কি ঘটবে। তাদের কথায় প্রথম যা দেখা যাবে তা হলো অকল্পনীয় মাত্রায় মানুষের মৃত্যু।

প্রথম এক সপ্তাহেই মৃত্যু হবে ৩ থেকে ৪ লাখ মানুষের সামরিক ও বেসামরিক লোকসহ। আর তিন সপ্তাহ শেষ হতে হতে মৃত্যু ঘটবে ২০ লক্ষেরও বেশি। দুই বিশেষজ্ঞের একজন হলেন ডেভিড ম্যাক্সওয়েল, যিনি মার্কিন সেনাবাহিনীর হয়ে কোরিয়া অঞ্চলে কাজ করেছেন এবং আরেকজন ব্রুস বেকটল - যিনি পেন্টাগনের সাবেক একজন বিশ্লেষক।

ডেভিড ম্যাক্সওয়েল বলছেন, উত্তর কোরিয়ার একজন সেনানায়ক এক্ষেত্রে যা করতে চাইবেন তা হলো- তাদের গোলন্দাজ বাহিনীর ক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার- যার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ায় যত বেশি সম্ভব মৃত্যু ও ধ্বংস ঘটানো।

প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উত্তর কোরিয়া থেকে আক্ষরিক অর্থেই লাখ লাখ কামানের গোলা ও রকেট বৃষ্টির মতো পড়তে থাকবে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর। এর অনেকগুলো পড়বে রাজধানী সিউলেও। উত্তর কোরিয়ার রিজার্ভ বাহিনীর সংখ্যা প্রায় ৬০ লাখ। তাই তাদের বলা যেতে পারে বিশ্বের চতুর্থ বৃহৎ সামরিক বাহিনী।

যখনই তাদের নেতা কিম জং উন মনে করবেন যে তিনি হুমকির মুখে- তখনই তিনি আক্রমণের নির্দেশ দেবেন। এ নির্দেশ বহু কারণে আসতে পারে। মার্কিন বাহিনীর বা তাদের মিত্ররা যদি নিজেরাই আগে আক্রমণ করে, বা কোনো একটা ভুল পদক্ষেপও নেয়- তা থেকেও এটা ঘটে যেতে পারে- বলেন ডেভিড ম্যক্সওয়েল।

এ পরিস্থিতিতে আমেরিকানদের কি প্রতিক্রিয়া হবে? ব্রুস বেকটল বলছেন, তাদের কৌশল হবে বিমানবাহিনীর শক্তি ব্যবহার করা, এবং উত্তর কোরিয়ার বাহিনীকে যতটা সম্ভব আটকে রাখার চেষ্টা করা- সময় নেয়া, যাতে ট্যাংক, ট্রাক, সাঁজোয়া যান, কামান ইত্যাদি ভারি সামরিক সরঞ্জাম এবং স্থল সেনাদের যুদ্ধজাহাজের বহরে ওঠানো যায়।

মেরিন কোরের সৈন্যরা জাপান থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগবে তিন বা চারদিন। টেক্সাস থেকে ভারি ট্যাংকগুলোকে নিয়ে আসতে সময় লাগবে তিন সপ্তাহ। যুদ্ধের সমাপ্তিটা কি ধরনের হবে? উত্তর কোরিয়ার সেনাবাহিনীর সমরাস্ত্র, খাদ্য, জ্বালানি ইত্যাদির যা মজুত আছে তাতে তারা দুই থেকে তিন সপ্তাহ যুদ্ধ করতে পারবে। তাদের পরিকল্পনার মূল কথাই হবে যে এ সময়ের মধ্যেই যা করার তা করে ফেলতে হবে। কারণ এর পর তাদের কিছুই থাকবে না।

তাদের সামরিক ইউনিটগুলো ভেঙে পড়তে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধের তীব্রতাও কমে আসবে। সে সময় কিম জং আন বুঝতে পারবেন যে তার আর যুদ্ধ করার মতো ক্ষমতা নেই। এবং যখন তারা এটা বুঝতে পারবে, তখন তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার না করার আর কোনো কারণ থাকবে কি? তারা ভাববে, এর মাধ্যমে কয়েক লাখ আমেরিকানকে তো হত্যা করা যাবে- বলেন ব্রুস বেকটল। বিবিসি বাংলা।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।