পাহাড়ি ঢলে ধুনটে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বগুড়ার ধুনটে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহড়াবাড়ী ১নং স্পারের ৮০ মিটার অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত শুক্রবার দুপুর ২টা পর্যন্ত ওই স্পারের ৮০ মিটার স্যাংক (মাটির তৈরি) ধসে যায়। ফলে ভাঙন জনপদের মানুষের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, গত ২০০১-২০০২ অর্থবছরে যমুনা নদীর ভাঙন রোধে প্রায় ২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে শহড়াবাড়ী ও বানিয়াজান এলাকায় দুটি স্পার নির্মাণ করা হয়। বানিয়াজান স্পারটির নির্মাণ কাজ সময়মতো শেষ হলেও ত্রুটিপূর্ণ নকশা ও পদ্ধতিগত ভুলের কারণে শহরাবাড়ি স্পারটির ৭২৭ মিটার স্যাংক নির্মাণ করার পর মূল ট্রাকচার তৈরির সময় পানির প্রবল স্রোতে ওই ট্রাকচার ধসে যায়। বছরের পর বছর ধরে শহরাবাড়ি স্পারের স্যাংক রক্ষার জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হয়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, পাউবোর এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে গত ৩/৪ মাস আগে এক ঠিকাদার শহড়াবাড়ী স্পারের কাছে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামতসহ বাঁধের পাশের গর্ত ভরাট করেন। ফলে ওই স্পারটি হুমকির মুখে পড়ে। যমুনা নদী পাড়ের শতাধিক মানুষ স্পার রক্ষার জন্য সেসময় বালু উত্তোলন বন্ধ করতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি।
এদিকে বর্ষা মৌসুমে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে স্পারটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। পানির প্রবল স্রোত ও নদীতে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে বুধবার রাত থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত শহড়াবাড়ী স্পারের ৮০ মিটার স্যাংক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
এ বিষয়ে শহড়াবাড়ী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, স্পারের কাছ থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালু উত্তোলন করায় বর্ষা মৌসুমে স্পারের তলদেশ থেকে বালু শূন্য হওয়ায় ধস শুরু হয়। স্পারটি রক্ষা করা না গেলে ধুনট উপজেলার শহড়াবাড়ী থেকে ভাটির দিকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত পাউবোর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ডান তীর সংরক্ষণ প্রকল্পসহ সরকারি ও বেসরকারি অনেক স্থাপনা হুমকির মুখে পড়বে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মোত্তালেব জাগো নিউজকে বলেন, ড্রেজার মেশিন দিয়ে যমুনা নদী থেকে যে পরিমাণে বালু উত্তোলন করা হয়েছে, তাতে স্পারের কোনো ক্ষতির আশংকা নেই। মূলত পানির প্রবল বেগেই স্পারের স্যাংকটি হঠাৎ করেই ধসে গেছে। তবে এ ধস ঠেকানোর জন্য জরুরি ভিত্তিতে সিসি ব্লক এবং বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
লিমন বাসার/এমজেড/এমএস