দু’মাসে রাখাইনে আরও ৪০ গ্রাম পুড়িয়েছে সেনাবাহিনী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৯ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭

স্যাটেলাইটে তোলা ছবি বিশ্লেষণের পর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গত দু’মাসে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অক্টোবর ও নভেম্বরে আরও ৪০টি গ্রামের ভবনসহ বহু ঘরবাড়ি ধ্বংস করা হয়েছে বলে সংস্থাটি প্রমাণ পেয়েছে। ২৫ অাগস্টের পর রাখাইনে এ নিয়ে ৩৫৪টি গ্রাম আংশিক বা পুরোপুরি পুড়িয়ে করে দেয়া হয়েছে।

এই সময়ের মধ্যে হাজার হাজার রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে একটি বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

সংস্থাটি জানিয়েছে, স্যাটেলাইট ছবিগুলো প্রমাণ করছে যে, এই ধ্বংসযজ্ঞ এমন সময়েও চালানো হয়েছে যখন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার। গত ২৩ নভেম্বর ওই সমঝোতা হয়।

২৫ নভেম্বর রাখাইনের মংডুর কাছে মিয়াও মি চ্যাঙ গ্রামে আগুন আর ঘরবাড়ি ধ্বংসের ছবি তুলেছে স্যাটেলাইট। পরের এক সপ্তাহের মধ্যে চারটি গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। সংস্থাটির এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলছেন, সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরের সময়েও রাখাইন গ্রামে বার্মার সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো থেকে এটাই প্রমাণ হয়, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার এই প্রতিশ্রুতি একটি প্রচারণামাত্র। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ধ্বংসের যেসব অভিযোগ বার্মার সেনাবাহিনী অস্বীকার করে আসছে সেটাই প্রমাণ করছে এসব স্যাটেলাইট ছবি।

মিয়ানমারের মংডু, বুথিডাং আর রাথিডাং শহরে আশেপাশের ১ হাজারের বেশি গ্রামের ওপর স্যাটেলাইটের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পেয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ বছর আগস্টের শেষের দিকে রাখাইনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এসব গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়।

সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫৪টি গ্রামের মধ্যে অন্তত ১১৮টি গ্রামে হামলা হয়েছে সেপ্টেম্বরের ৫ তারিখের পরে যখন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের অফিস থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যে, রাখাইনে অভিযানের সমাপ্তি হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, আগস্ট থেকে রাখাইনে শুরু করা এই অভিযানের সময় বার্মার সেনাবাহিনী হত্যা, ধর্ষণ, গ্রেফতার আর ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড চালিয়েছে। জাতিগত নির্মূলের এই অভিযান মানবতা বিরোধী অপরাধের সঙ্গেই সমতুল্য বলে সংস্থাটি প্রমাণ পেয়েছে।

গত ১৪ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে বেসরকারি দাতব্য প্রতিষ্ঠান মেদসঁ সঁ ফ্রঁতিয়ে (এমএসএফ) বলছে, মিয়ানমারে আগস্টে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর এক মাসে অন্তত ৬ হাজার ৭শ রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬ হাজার ৭শ মৃত্যুর কারণ সহিংসতা, যার মধ্যে পাঁচ অথবা তার চেয়েও কম বয়সের শিশু ছিল ৭৩০ জন।

টিটিএন/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।