ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান, নিষেধাজ্ঞা চায় লেবানন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২৪ এএম, ১০ ডিসেম্বর ২০১৭

জেরুজালেমকে ইসরায়লের রাজধানী হিসেবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেয়া সিদ্ধান্ত বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে আরব রাষ্ট্রগুলোর জোট আরব লীগ। ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের কারণে ওই অঞ্চলে সহিংসতা বৃদ্ধি পেতে পারে বলেও সতর্ক করা হয়েছে।

মিসরের রাজধানী কায়রোতে আরব লীগের জরুরি বৈঠকের রোববার একি বিবৃতিতে সংস্থাটির সদস্য রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ওই আহ্বান জানান। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের মারাত্মক লঙ্ঘন’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘোষণার বৈধ কোনো প্রভাব নেই এবং এটি অকার্যকর।

জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর ঘোষণায় মার্কিন নীতিমালার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জেরুজালেমকে রাজধানীর ব্যাপারে দু’পক্ষের সঙ্গে অালোচনা করেই নির্ধারণ করতে হবে। পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনিরা তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে চায়।

‘ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের আইনি কোনো প্রভাব নেই...এটি উত্তেজনা ও ক্রোধ বৃদ্ধি করেছে এবং ওই অঞ্চলকে আরো বেশি সহিংসতা ও অস্থিতিশীলতায় নিমজ্জিত করেছে।’ শনিবার সন্ধ্যায় আরব লীগের ওই বৈঠক শেষ হওয়ার পর কায়রোর স্থানীয় সময় রাত তিনটায় বিবৃতিতে দিয়েছে সংস্থাটি।

আরব লীগ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত বাতিলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব আনবে তারা। তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অারব দেশগুলোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত বলে বৈঠকে মন্তব্য করেন লেবাননের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জিব্রান বাসিল।

নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য না দিয়ে লেবাননের এই মন্ত্রী বলেন, ‘কূটনৈতিক পদক্ষেপের পাশাপাশি অবশ্যই পূর্ব-পদক্ষেপ নিতে হবে...এরপরই রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও আর্থিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।’

তবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপে লেবাননের মন্ত্রীর এই আহ্বানের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি আরব অঞ্চলের ২২ দেশের সংস্থা আরব লীগ। আরব লীগের প্রধান আহমেদ আবুল ঘেইত ট্রাম্পের সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক এবং অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, জেরুজালেমকে রাজধানীর স্বীকৃতি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটে ‘রাজনৈতিক সমাধানের ওপর ভয়াবহ আঘাত’।

কায়রোতে আরব লীগের বৈঠকের আগে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী রিয়াদ আল-মালিকি বলেন, শান্তি প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে আর মেনে নেবে না ফিলিস্তিন। কারণ দেশটি এখন বিবাদের পক্ষ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করেছে, মধ্যস্থতাকারী হিসেবে নয়।

৬ ডিসেম্বর তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে জেরুজালেমকে স্বীকৃতি দিয়েছেন তিনি। তার এ স্বীকৃতির জেরে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে মার্কিন মিত্ররাও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সমালোচনা করছে।

বিশ্ব নেতারা বলছেন, ট্রাম্পের এই স্বীকৃতির ফলে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন শান্তি প্রক্রিয়া ভেস্তে যেতে পারে। এর আগে শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে জেরুজালেম ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কড়া সমালোচনা ও নিন্দা জানানো হয়।

ট্রাম্পের জেরুজালেম ঘোষণার জেরে গাজা উপত্যকা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে এখনো প্রতিবাদ চলছে। বিক্ষোভে উত্তাল গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে শুক্রবার দুই ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। শনিবার ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় ২ হামাস নেতা নিহত ও আরো অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।

সূত্র : রয়টার্স, আলজাজিরা।

এসআইএস/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।