টাইম ম্যাগাজিনের সেরা ব্যক্তিত্ব
যৌন অত্যাচার এবং নিগ্রহের বিষয়ে বিশ্বব্যাপী যারা মৌনতা ভঙ্গ করেছেন তাদের সাহসিকতার স্বীকৃতি দিয়ে ইংরেজি সাময়িকী টাইম ম্যাগাজিন তাদেরকে বছরের সেরা ব্যক্তিত্বের মর্যাদা দিয়েছে।
নৈশব্দ ভঙ্গকারী শিরোনামে নিউ ইয়র্কভিত্তিক এই সাময়িকী বলছে, তারা একযোগে যে ক্রোধ প্রকাশ করেছেন তার ফল হয়েছে তাৎক্ষণিক এবং স্তম্ভিত হয়ে যাওয়ার মতো।
বিভিন্ন দেশে রাজনীতি, ব্যবসা, শিল্প-সংস্কৃতির জগতের বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যৌন অত্যাচারের বেশ কিছুু অভিযোগ নিয়ে এগিয়ে এসেছেন নিগ্রহের শিকার নারী এবং পুরুষরা।
হলিউডের শীর্ষ প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টিনের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ থেকে শুরু হয়েছিল মৌনতা ভঙ্গের এই পালা। তারপর টুইটারে মি-টু হ্যাশট্যাগে একে একে অনেক নারী এবং বেশ কয়েকজন পুরুষও নাম করা এবং প্রভাবশালী বিভিন্ন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেন। টাইম ম্যাগাজিনও সেই সাহসী ব্যক্তিদের স্বীকৃতি দিল।
টাইম ম্যাগাজিনের প্রধান সম্পাদক এডওয়ার্ড ফেলসেনথাল বলেছেন, গত কয়েক দশকের মধ্যে এত দ্রুত কোনো সামাজিক পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত এই প্রথম। সাহস করে এগিয়ে এসেছেন এমন কয়েকজন নারীর ছবি ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে জায়গা পেয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যাশলে জুড। হার্ভে ওয়েন্সটেইনের বিরুদ্ধে যে সব নারীরা প্রথম মুখ খুলেছিলেন তিনি তাদের একজন।
পপ তারকা টেইলর সুইফটও রয়েছেন টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদে। আরও রয়েছেন মেক্সিকোর ৪২ বছর বয়স্ক খামার কর্মী ইসাবেল পাসকুয়াল (ছদ্মনাম) এবং উবারের সাবেক প্রকৌশলী সুজান ফাউলার যিনি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনেন।
টাইম ম্যাগাজিনে বলা হয়েছে, যেসব নারী এবং পুরুষ তাদের মৌনতা ভেঙ্গেছেন তারা নানা শ্রেণী, বর্ণ, পেশা এবং বিশ্বের নানা দেশের। কিন্তু এরা সবাই এক সঙ্গে মিলে লজ্জাকে ক্রোধে রূপান্তর করেছেন, পরিবর্তনের জন্য হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে উজ্জীবিত করেছেন এবং অত্যন্ত ক্ষমতাধর কিছু মানুষকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করেছেন।
১৯২৭ সাল থেকে টাইম ম্যাগাজিন বছরের সেরা ব্যক্তিত্ব নির্বাচিত করছে। অনেকদিন পর্যন্ত শুধু একজন ব্যক্তিকে এই সম্মান দেওয়া হতো তবে সাম্প্রতিক সময়ে মহৎ কোনো কাজের সঙ্গে জড়িত একাধিক ব্যক্তিকে সমষ্টিগতভাবে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে।
টিটিএন/আরআইপি