ফেসবুকে কাশ্মীরী জঙ্গীদের ছবি নিয়ে উদ্বেগে ভারত
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি আপেল বাগানে তোলা একদল সশস্ত্র জঙ্গীর একটি ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। আর এই ছবিকে ঘিরে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম উদ্বেগ।
কাশ্মীর সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানায়, একে-ফোর্টি সেভেন রাইফেল হাতে ছবির ওই যোদ্ধারা হিজবুল মুজাহিদিনের সদস্য এবং সেখানে তরুণদের মধ্যে উগ্রপন্থার আদর্শ ছড়িয়ে দিতেই কৌশলে তারা সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার শুরু করেছে।
দক্ষিণ কাশ্মীরের কোনও একটি আপেল বাগানে তোলা ১১ জন জঙ্গীর হাস্যোজ্বল ওই ছবি গত কয়েকদিনে ফেসবুকে হাজার হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে। মূলত কাশ্মীরী তরুণদের মধ্যেই ছবিটি ভীষণ জনপ্রিয়তা পেয়েছে এবং ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর ধারণা- ওই রাজ্যের যুবকদের উগ্রপন্থার দিকে টেনে আনতেই ছবিটি ফেসবুকে আপলোড করা হয়েছে। ১১ জনের ওই ছবিতে কাশ্মীরের এক মন্ত্রীর সাবেক দেহরক্ষীও রয়েছে, মাসতিনেক আগে দুটি রাইফেল নিয়ে যিনি পালিয়ে যান।
এ সম্পর্কে ইউনিভার্সিটি অব কাশ্মীরের তরুণ অধ্যাপক ড. তাসলিম আহমেদ ওয়ার জানিয়েছেন, রাজ্যে কোনও জঙ্গী গোষ্ঠীর প্রচারের জন্য সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করা কিন্তু বেশ কঠিন। যে ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এ রাজ্যে আছে তাতে আমার মনে হয় না কোনও জঙ্গী গোষ্ঠী সোশ্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের সাইবার সেল তো নজরদারি চালাচ্ছেই, আরো নানা এজেন্সিও মনিটরিং করছে, এছাড়া দিল্লির কোনো নেতা এলে বা সামান্যতম কোনো গন্ডগোলের সম্ভাবনা থাকলেই এখানে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এটা এখানে সবারই জানা।
যে সব সাইটে এই ছবিটি আপলোড করা হয়েছে, ভারতীয় নিরাপত্তা এজেন্সিগুলো তার সবই এখন কাশ্মীরে ব্লক করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক কাজী সুফিওর রহমান বলেন, উগ্রপন্থার বীজ যেন ওই অঞ্চলের মানুষের ভেতরেই আছে আর এই যুগে তাতে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারও একরকম অনিবার্য।
দিল্লির নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল দীপঙ্কর ব্যানার্জি বলেন, তার একটা বড় কারণ ভারত সেখানে চীনের মতো ইন্টারনেট ব্লক করতে পারেনি। চীন যেভাবে সঙ্গে সঙ্গে একটা আপত্তিকর খবর বা সাইট ব্লক করে দিতে পারে, কাশ্মীরে ভারতের তা করার মতো মেকানিজম বা লোকবল কিন্তু নেই। ভারত মনে করেছে সেটা করা সম্ভব নয় বা হয়তো উচিতও নয়।
এসআইএস/আরএস/আরআইপি