সিমেন্ট খাতে আয়ের পাশাপাশি কমেছে সম্পদমূল্য


প্রকাশিত: ০২:১৪ পিএম, ০১ জুলাই ২০১৫

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের আয় কমেছে। পাশাপাশি পতন হয়েছে শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যেরও। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্র বলছে, সর্বশেষ হিসেবে সিমেন্ট খাতের ৭২ শতাংশ কোম্পানির আয় কমেছে। অন্যদিকে শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্যে কমেছে ৫৭ শতাংশ কোম্পানির। ২০১৪ সালের সমাপ্ত বছরের আর্থিক হিসাব পর্যালোচনায় এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় দীর্ঘদিন পুঁজিবাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। তাই তালিকাভুক্ত অন্যান্য খাতের কোম্পানির মতো সিমেন্ট খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পরেছে। তবে ভবিষতে এ খাতকে সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। সরকারের সাম্প্রতিক পরিকল্পনা অনুসারে যদি পদ্মা সেতুসহ আরো কিছু বড় উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হয়, তবে এ খাতের কোম্পানিগুলোর আয় বাড়বে। ফলে এ খাতের বিনিয়োকারীরাও লাভবান হবেন। এ ছাড়া অনেক বিদেশি সংস্থাও এ মুহূর্তে বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতকে বিনিয়োগ উপযোগী মনে করছেন।

স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে সিমেন্ট খাতের তালিকাভুক্ত সাতটি কোম্পানি রয়েছে। এ মধ্যে আয় কমেছে ৫টির (আরামিট সিমেন্ট, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, মেঘনা সিমেন্ট, কনফিডেন্স সিমেন্ট ও হেইডেলবার্গ সিমেন্টের) অন্যদিকে বছর শেষে আয় বেড়েছে মাত্র দুটি সিমেন্ট কোম্পানির (লাফার্জ সুরমা ও মীর সিমেন্টের)।

আর সাতটি কোম্পানির মধ্যে সম্পদমূল্যে কমেছে আরামিট, মেঘনা, কনফিডেন্স ও হেইডেলবার্গ এই চারটি সিমেন্টের, বাকি তিনটি কোম্পানির সম্পদ মূল্য বছর শেষে বেড়েছে। এদিকে সার্বিক সিমেন্ট খাতের আয় কমলেও লাফার্জ সুরমা ও মীর সিমেন্টের আয় ও সম্পদ মূল্য বেড়েছে। আর প্রিমিয়ার সিমেন্টের আয় কমলেও বেড়েছে শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য।

আরামিট সিমেন্ট :
২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সমাপ্ত অর্থবছরের হিসেবে আরামিট সিমেন্টের তথ্য অনুযায়ী, কোম্পানিটি কর পরিশোধের পর মুনাফা করেছে এক কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর শেয়ার প্রতি আয় করেছে ৫১ পয়সা। যা আগের বছর একই সময় ছিল শেয়ার প্রতি আয় করেছিল দুই টাকা ৫৬ পয়সা। এক বছরের ব্যবধানে শেয়ার প্রতি আয় কমেছে দুই টাকা ৫ পয়সা। আরামিট সিমেন্টের ২০১৪ সাল শেষে শেয়ার প্রতিসম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৪৯ পয়সা। যা ২০১৩ সালে ছিল ১৬ টাকা ২২ পয়সা।

লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট :   
এদিকে এ খাতের বহুজাতিক কোম্পানি লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের আয় বেড়েছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরে কর পরিশোধের পর মুনাফা করেছে ২৮১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা। আর শেয়ার প্রতি আয় করেছে দুই টাকা ৪৩ পয়সা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ২৫৪ কোটি ৬১ লাখ টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় করেছিল দুই টাকা ১৯ পয়সা। ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতিসম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৪১ পয়সা। যা ২০১৩ সালে ছিল ৯ টাকা ৫১ পয়সা।   

প্রিমিয়ার সিমেন্ট :
প্রিমিয়ার সিমেন্টের ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া সমাপ্ত অর্থবছরের হিসেবের শেয়ারপ্রতি আয় কমেছে ২২ পয়সা। আলোচিত বছরে কোম্পানিটি মুনাফা করেছে ৫০ কোটি ৪১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আর শেয়ার প্রতি আয় করেছে চার টাকা ৭৮ পয়সা। যা আগের বছর ২০১৩ সালে ছিল ৪৯ কোটি ৩৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় করেছিল ৫ টাকা।

মেঘনা সিমেন্ট :
মেঘনা সিমেন্টেরও আয় কমেছে ৭৫ পয়সা। কোম্পানিটি আলোচিত বছরে আয় করেছে চার টাকা ৪৮ পয়সা। ২০১৩ সালে ছিল পাঁচ টাকা ২৩ পয়সা। আলোচিত বছরে কর পরিশোধের পর মুনাফা করেছে ১০ কোটি ৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতিসম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩৬ টাকা ১০ পয়সা। যা ২০১৩ সালে ছিল ৩৬ টাকা ৫৪ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য কমেছে ৪৪ পয়সা।   

কনফিডেন্স সিমেন্ট :
কনফিডেন্স সিমেন্টের আয় কমেছে দুই টাকা ৭৭ পয়সা। কোম্পানিটি ২০১৪ সাল শেষে আয় করেছে পাঁচ টাকা ৩২ পয়সা। ২০১৩ সালে ছিল ৮ টাকা ৯ পয়সা। আলোচিত বছরে কর পরিশোধের পর মুনাফা করেছে ২৩ কোটি ৯২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতিসম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৬৪ টাকা ৪১ পয়সা। যা ২০১৩ সালে ছিল ৬৫ টাকা ১১ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানের শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য কমেছে ৬০ পয়সা।   

হেইডেলবার্গ সিমেন্ট :
২০১৪ সালের সমাপ্ত বছর শেষে হেইডেলবার্গ সিমেন্টের আয় কমেছে পাঁচ টাকা ২১ পয়সা। কোম্পানিটি ২০১৪ সাল শেষে আয় করেছে ২০ টাকা ৮৮ পয়সা। ২০১৩ সালে ছিল ২৬ টাকা ৯ পয়সা। আলোচিত বছরে কর পরিশোধের পর মুনাফা করেছে ১১৭ কোটি ৯৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতিসম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১৫ টাকা ৪৬ পয়সা। যা ২০১৩ সালে ছিল ১৩২ টাকা ৫৮ পয়সা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানের শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য কমেছে ১৭ টাকা ১২ পয়সা।   

মীর সিমেন্ট:
মীর সিমেন্টের আয় বেড়েছে। কোম্পানিটি আলোচিত বছরে কর পরিশোধের পর মুনাফা করেছে ৬৭ কোটি ৪৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। আর শেয়ার প্রতি আয় করেছে চার টাকা ৫৪ পয়সা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ৬৬ কোটি ৫৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং শেয়ার প্রতি আয় করেছিল চার টাকা ৪৮ পয়সা। ২০১৪ সালে শেয়ার প্রতিসম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ৩৮ টাকা ২২ পয়সা। যা ২০১৩ সালে ছিল ৩৭ টাকা ৬৭ পয়সা।   

এসআই/বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।