‘মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা যৌক্তিক হবে না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:২০ এএম, ১৫ নভেম্বর ২০১৭

রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কটের জেরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এখনই নিষেধাজ্ঞা আরোপ যৌক্তিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন। বুধবার একদিনের সফরে মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে পৌঁছে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা সু চি ও সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকের পর টিলারসন এ মন্তব্য করেন। তবে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর বিশ্বাসযোগ্য নৃশংসতার অভিযোগের স্বাধীন তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।

টিলারসের সঙ্গে বৈঠকের পর নেইপিদোতে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রোহিঙ্গা সঙ্কটে নীরব না থাকার দাবি করেছেন মিয়ানমারের নেত্রী ও রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের জাতিগত নিধন অভিযানের জেরে আন্তর্জাতিক তীব্র সমালোচনা ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবির মধ্যে বুধবার নেইপিদো সফর করছেন টিলারসন।

তবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ মন্তব্য এসেছে রোহিঙ্গা সঙ্কটে অং সান সু চি নীরব ছিলেন না বলে কৌশলী বক্তব্য দেয়ার পর। সু চি টিলারসনকে বলেন, তিনি কথা বলার চেয়ে কাজেই বেশি মনযোগ দিয়েছেন; যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা কিংবা বিভাজন এড়ানো যায়।

rohingya

গত আগস্টের শেষের দিকে উত্তর রাখাইনে পুলিশি নিরাপত্তা চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার জবাবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ক্লিয়ারেন্স অপারেশন শুরু করে। এর পর বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার থেকে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়েছে।

সেনাপ্রধান ও সু চির সঙ্গে বৈঠকের পর টিলারসন বলেন, ‘ব্যাপক পরিসরে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এ মুহূর্তে যৌক্তিক হবে বলে আমি মনে করি না।’

‘আমরা মিয়ানমারকে সফল হিসেবে দেখতে চাই। আপনি শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারেন না এবং বলতে পারেন না যে সঙ্কট উতড়ে গেছে’- সু চির পাশে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন টিলারসন।

তিনি বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক নৃশংসতার যে বিশ্বাসযোগ্য অভিযোগ উঠেছে সেব্যাপারে ওয়াশিংটন গভীর উদ্বিগ্ন। এসব অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত করতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানান টিলারসন।

rohingya

মার্কিন এই শীর্ষ কূটনীতিক রাখাইনের রোহিঙ্গা সঙ্কটের ব্যাপারে বলেন, ‘সেখানে যা ঘটেছে তার দৃশ্যগুলো ভয়ঙ্কর।’ তবে সেনাবাহিনীর নৃশংসতার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে সু চি নেতৃত্বাধীন প্রশাসন। একই সঙ্গে জাতিসংঘের তদন্ত কর্মকর্তাদের রাখাইনে প্রবেশের অনুমতি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

তবে রোহিঙ্গা সঙ্কটে নীরব ভূমিকার কারণে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়লেও তা উড়িয়ে দিয়েছেন সু চি। টিলারসনের সঙ্গে বৈঠকের পর সু চি বলেন, তিনি এমনভাবে কথা বলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন যাতে উত্তেজনার সৃষ্টি না হয়।

‘আমি নীরব ছিলাম না...আমি যা বলেছি তা মানুষের মনপুত নাও হতে পারে। আমি যা বলেছি তার অর্থ উত্তেজনাপূর্ণ হওয়া নয়। বরং এর অর্থ হচ্ছে নিখুঁত...মানুষকে একে অপরের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো নয়।’

সূত্র : এএফপি।

এসআইএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।