মাগুরায় আম নিয়ে বিপাকে চাষিরা
মাগুরা জেলায় এ বছর আমের বাম্পার ফলন হলেও টানা বৃষ্টিতে বাগানগুলোতে হোপার পোকাসহ পচন রোগ দেখা দিয়েছে। রোগের আক্রমণ ঠেকাতে চাষিরা বিভিন্ন দেশি-বিদেশি কিটনাশক প্রয়োগ করলেও কোনো সুফল মিলছে না। ফলে চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়াসহ লোকসানের আশঙ্কা করছেন তারা।
মাগুরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পার্থ প্রতীম সাহা জাগো নিউজকে জানান, জেলায় এবছর ১ হাজার হেক্টর জমিতে ল্যাংড়া, ফজলী, হিমসাগর, বোম্বাই, গোপাল ভোগ, আম্রপালি, মোহনভোগ, মল্লিকা আশ্বিনা জাতের আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে মাগুরা সদর উপজেলায় ৪৫০ হেক্টর, শ্রীপুর উপজেলায় ৩২৫ হেক্টর, শালিখায় ৫০ হেক্টর ও মহম্মদপুরে ১৭৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ২০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ধরা হয়েছিলো। সে হিসেবে এবছর আম উৎপাদন হবে ১৫ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন।
মাগুরার ইছাখাদা, হাজরাপুর, কাশিঁনাথপুর, শত্রুজিৎপুর, নাকোল, আমুড়িয়া, সিংড়া, শ্রীকোল এলাকায় আমের আবাদ বেশি হয়েছে। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে আমে পচন রোগ দেখা দেয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রতিটি বাগানেই উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় চাষিরা।
আম চাষি ওলিয়ার রহমান জানান, গাছে থেকেই আমের উপর কালো দাগ হয়ে আমগুলো ফেঁটে মাটিতে ঝরে পড়ছে। কৃষি বিভাগের পরামর্শ মোতাবেক কিটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো প্রতিকার না মেলায় উপযুক্ত মূল্যও পাচ্ছেন না কৃষকরা।
এসব বিষয়ে মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুব্রত কুমার চক্রবর্ত্তী জাগো নিউজকে জানান, গাছের গোড়ায় সাফসিন ও নিপাসিন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার করলে পোকার আক্রমণ অনেকাংশে কমে যাবে। এছাড়া কৃষকের আম বাগানে মাত্রাতিরিক্ত ঝাপড়া থাকা, পাতা ও আগাছা পরিস্কার না করায় বাগানের ভিতর পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল হয় না। ফলে বাগানে হোপার পোকার আবাসস্থল হয়। এ ক্ষেত্রে পাতার নিচের অংশ ও গাছের গোড়ায় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সাফসিন ও নিপাসিন জাতীয় কিটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে আম চাষে কৃষকদের আরো আগ্রহ সৃষ্টিসহ মাগুরার আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে রফতানি করার লক্ষে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অধিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় আম বাগান মালিকরা।
এমএএস/পিআর