কার্বোনেটেড পানির একমাত্র প্রাকৃতিক উৎস পেদরাস সালগাদাস

নাঈম হাসান পাভেল
নাঈম হাসান পাভেল নাঈম হাসান পাভেল , পর্তুগাল প্রতিনিধি পর্তুগাল
প্রকাশিত: ০৬:১১ এএম, ০৪ নভেম্বর ২০১৭

কোমল পানীয় বা সফট ড্রিংকস বলতে আমরা বুঝি এক প্রকার মাদকমুক্ত তরল পানীয় বিশেষ। কোকাকোলা, স্প্রাইট, সেভেন-আপ, রেডবুল, বুলডোজারসহ এমন হাজারো পণ্যের সঙ্গে আমরা পরিচিত যেগুলো কোমল পানীয়।

এসব পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সাধারণত চিনি, ক্যাফেইন, ক্যারামেল আর প্রাকৃতিক ফ্লেভার বা স্বাদের সঙ্গে গ্যাসযুক্ত করতে কার্বোনেটেড ওয়াটার ব্যবহার করা হয়।

পৃথিবীর প্রায় সব অঞ্চলে উৎপাদিত সফট ড্রিংকসে ব্যবহৃত কার্বোনেটেড পানির উৎসগুলো কৃত্রিম। লবণ, সোডিয়াম, সোডিয়াম ব্যাককার্বোনাট, পটাসিয়াম বাইকারোনেট, পটাসিয়াম সিটিরেট, পটাসিয়াম সলফেট, বা ডিস্কিয়াম ফসফেটের সংমিশ্রণে কার্বোনেটেড ওয়াটার কিংবা গ্যাসযুক্ত পানি তৈরি করা হয়।

তবে প্রাকৃতিক কার্বোনেটেড পানি ব্যবহারের কথা আজ পর্যন্ত কোনো কোমল পানীয় কোম্পানি বর্ণনা করেনি।

খাবার পানীয় বা পানি ন্যাচারালি কার্বোনেটেড বা গ্যাসযুক্ত হতে পারে, কিংবা এ পানি কোনো ধরণের প্রক্রিয়াজাত ছাড়াই সরাসরি পানের উপযোগী হতে পারে তা বেশিরভাগ মানুষের কাছেই অসম্ভব মনে হবে। তবে পর্তুগালের পেদরাস সালগাদাস শতভাগ কার্বোনেটেড ওয়াটার কিংবা গ্যাসযুক্ত পানির জন্য বিখ্যাত।

water

পৃথিবীর মোট পানির উৎসের শতকরা ০.৫ ভাগ পানি প্রাকৃতিকভাবে গ্যাসযুক্ত। যার সিংহভাগের উৎসই পর্তুগালের পেদরাস সালগাদাস অঞ্চলে। এ অঞ্চলের পাহাড়ি ঢলে নেমে আসা এ পানি সরাসরি গ্যাসযুক্ত থাকে। শতভাগ বিশুদ্ধ এ পানি কোনো ধরণের প্রক্রিয়া ছাড়াই পান করা যায়।

পর্তুগিজ চিকিৎসক জোসে জুলিও রদ্রিগেস ১৮৭১ সালে প্রথম এ পানি নিয়ে গবেষণা এবং ন্যাচারাল খাবার পানি হিসেবে বাজারে উন্মুক্ত করেন।

তবে কিছু কিছু পর্তুগিজ লেখকের মতে, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে রোমান যুগেও এ পানি প্রচলিত ছিল বলে বিভিন্ন প্রাচীন বইয়ে উল্লেখ আছে।

১৮৭১ সালে উন্মুক্তের পর ১৮৭৩ সালে এ পানীয় অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয়। এছাড়াও অসংখ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে পেদরাস সালগাদাস ন্যাচারাল ওয়াটার।

বর্তমানে পর্তুগালের সাধারণ নাগরিকদের কাছে এ পানি ‘আগুয়া দাস পেদরাস’ হিসেবে পরিচিত। এটি পর্তুগালে সুপরিচিত একটি ব্রান্ড ও জনপ্রিয় পানীয়। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে এখন স্পেন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, অ্যাঙ্গোলা, কানাডাসহ ২৫টিরও বেশি দেশে এ পানীয় পাওয়া যাচ্ছে।

এছাড়া নিউইয়র্ক, সাও পাওলো এবং বার্লিনের মতো বিশ্বমানের শহরে অচিরেই পাওয়া যাবে এ পানীয়।

এমএমজেড/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।