ঘরোয়া ক্রিকেটের সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ : আকরাম খান
বয়সভিত্তিক ঘরোয়া ক্রিকেটে গুরুত্ব দেওয়ার ফলাফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। ফলে লিটন দাশ, রনি তালুকদার এবং মোস্তাফিজুর রহমানের মতো প্রতিভাবান তরুণ ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভাল করছে। ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য হিন্দুকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে এ কথা বলেছেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট দলের খেলোয়াড় এবং সাবেক ওয়ানডে অধিনায়ক বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক মোহাম্মদ আকরাম খান।
হিন্দুকে দেয়া সাক্ষাতকারে আকরাম খান বলেন, ক্ষুদে ক্রিকেটারদের জন্য ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামোতে উন্নয়ন বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বেশি শক্তিশালী করছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া বাংলাদেশ ভারত সিরিজ শেষে ওয়ানডে ক্রিকেটের এলিট লিগে খেলার আনন্দদায়ক অর্জন তাদের সেই প্রচেষ্টার ফল।
এর আগে খেলোয়াড়রা দলে খেলার সুযোগ পাওয়ার জন্য ব্যাপকভাবে মুখিয়ে থাকত। এ সময় তিনি বিসিবিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, গত সাত-আট মাসে ক্রিকেটাররা কয়েকটি ভালো টুর্নামেন্ট পেয়েছে। যেটি শুরু হয়েছিল গত বছরের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আগে প্রথম শ্রেণির কোন খেলা ছিল না। সেই সময় সব খেলোয়াড়ের জন্য ক্লাব ক্রিকেট ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কেননা ক্লাব ক্রিকেটে যারা ভালো খেলতো তারাই পরবর্তীতে জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পেত।
আকরাম খান বলেন, সেই সময় ক্রিকেট আমাদের দেশে তেমন জনপ্রিয় ছিল না। সবার পছন্দের এক নাম্বারের তালিকায় ছিল ফুটবল। আমরা বছরে দুই-তিনটা টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পেতাম। কিন্তু বর্তমানে খেলোয়াড়রা খেলার অনেক সুযোগ পাচ্ছেন।
বিসিবির প্রধান সূচিতে ছিল সম্প্রতি জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ এবং ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের খেলার আয়োজন করা। আর এই প্রতিযোগিতায় খেলোয়াড়দের পারফর্ম্যান্সের ওপর নির্ভর করে তাদের বাছাই করা হয়।
সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ক্রিকেটে অনেক ভাল করেছে। শুধুমাত্র গত বছর ছাড়া। কেননা এ সময় আমাদের দেশে অনেক সমস্যা ছিল। এছাড়া বেশ কয়েকজন খেলোয়ার অসুস্থ্যও ছিল। ক্রিকেটাররা এখন অনেক সুযোগ-সুবিধা এবং অর্থও পাচ্ছে।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেট:
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটকে শক্তিশালী করা চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে আকরাম খান বলেন, আমরা অনুর্ধ্ব ১৪, ১৬ এবং ১৯ বছর বয়সী দলের জন্য একটা কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। আমরা অনুর্ধ্ব ১৯ দলের জন্য ২৪ থেকে ৩০ জনকে দুই বছরের জন্য বাছাই করে থাকি এবং বাছাইকৃত এসব খেলোয়াড়দেরকে বিসিবির জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
এ সময় তিনি মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাশ এবং রনি তালুকদাদের কথা উল্লেখ করে বলেন, তারা অ্যাকাডেমিতে অনেক ম্যাচ খেলেছে, যার ফলে তারা জাতীয় দলে ভালো করছে।
আকারাম খান আরো বলেন, অনুর্ধ্ব ১৯ খেলোয়াড়দের নিয়ে শিগগিরই দেশের সবক’টি বিভাগে একটা লিগ আয়োজন করা হবে। এখান থেকে প্রতিভাবান খেলোয়াড়দেরকে বের করে আনা হবে।
স্কুল ক্রিকেট থেকেও ভালো ভালো খেলোয়ার বের করে আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আকরাম খান বলেন, স্কুল পর্যায়ে প্রতিবছর ক্রিকেট খেলার আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেটি যথাযথভাবে করা হয় না। এ বছর থেকে আমরা স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদেরকে উৎসাহিত করতে নতুন করে আয়োজনের চিন্তা করেছি। ফলে এখান থেকেও আমরা কিছু ভাল খেলোয়ার বের করে আনতে পারব। এ সময় আকরাম খান বলেন, ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ একদিন ভালো সংবাদ হবে।
এএইচ/আরএস/পিআর