নেপালে মা-শিশুর জীবন বাঁচাচ্ছে সৌরবাক্সের আলো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৩৩ এএম, ০১ নভেম্বর ২০১৭

নেপালে সৌরবাক্সের ব্যবহার ক্রমশই বাড়ছে। হলুদ রঙের এই বাক্সটি আসলে হচ্ছে একটি সৌরশক্তিচালিত বাতি যা বিদ্যুৎ নেই এমন জায়গাতেও আলোর উৎস হিসেবে ব্যবহার করা যায়। বিশেষ করে এই সৌরবাক্স কাজে লাগানো হয় নিরাপদে সন্তান জন্মদান নিশ্চিত করতে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বর্তমানে নেপালে ১১০টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই সৌরবাক্স পর্যাপ্ত বৈদ্যুতিক শক্তি দিচ্ছে। এর আগে মায়েরা বাচ্চার জন্ম দিতেন হয় অন্ধকার ঘরে, নয়তো বহু মাইল পথ পেরিয়ে সবচেয়ে কাছের হাসপাতালে গিয়ে। নেপালে প্রতি চারজনের একজনের কাছে গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছায়নি। অনেক সময় সন্তানের জন্ম হয় মোমবাতির আলোতে। প্রায়ই দেখা যায় আলো না থাকায় হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের দেরি হয় বা বাতিল করতে হয়।

কিন্তু নেপালের পাণ্ডবখনি গ্রামে ২০১৪ সালে এই যন্ত্রটি স্থাপিত হওয়ার পর এই কেন্দ্রে প্রসবকালীন কোনও প্রসূতি বা বাচ্চার মৃত্যু ঘটেনি এখনও পর্যন্ত।

প্রসবের সময় অত্যধিক রক্তপাত, উচ্চ রক্তচাপ বা বাধাজনিত জন্ম, সবগুলিই পরীক্ষা করতে হলে দরকার প্রচুর আলো। বাচ্চার জন্ম দেওয়ার সময় জীবন এবং মৃত্যুর মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিতে পারে এই আলোর উপস্থিতি। সন্তান জন্মের জায়গাটিতে আলো না থাকলে সাধারণ সমস্যাও বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। এমনকি মৃত্যুর কারণও হয়ে উঠতে পারে।

সেরকম অবস্থায় একটি সৌরশক্তিচালিত বাতি বাঁচাতে পারে প্রসূতি এবং সদ্যোজাত শিশুর প্রাণ। সৌরবাক্সের উদ্ভাবক যুক্তরাষ্ট্রের ডঃ লরা স্ট্যাচেল। এই বাক্সে থাকে একটি সোলার প্যানেল, একটি ব্যাটারি, চার্জ কনট্রোলার এবং কিছু চিকিৎসা যন্ত্রপাতি। গর্ভস্থ শিশুর হৃৎস্পন্দন মাপার যন্ত্রও থাকে। গোটা বিশ্বে এখন আড়াই হাজারের কাছাকাছি সৌরবাক্স স্থাপিত রয়েছে।

সৌরবাক্সের ব্যবহারের সুফল সম্পর্কে নেপালের হারি সুনার জানান, তার প্রথম সন্তানের জন্ম হয় খুব কম আলোতে। কিন্তু তার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হতে যাচ্ছে সৌর বাক্সের আলোতে। তিনি বলেন, আমি আনন্দিত যে এখন শুধু আমার জন্যে নয়, আমার গ্রামের সব নারীর জন্য আছে এই সৌরবাক্স।

টিটিএন/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।