অভিনব কায়দায় চাঁদাবাজি : পুলিশের এসআই সহযোগীসহ আটক


প্রকাশিত: ১২:৩০ পিএম, ২৫ জুন ২০১৫
প্রতীকী ছবি

চট্টগ্রামে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে শিল্প পুলিশের এক এসআইকে সহযোগীসহ আটক করা হয়েছে। এক বীমা কর্মকর্তাকে জিম্মি করে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আটকের পর তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় মামলা না নেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নগরীর জুবিলি রোডে ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি শাখা থেকে এসআই মাহবুবুর রহমান ও তার সহযোগী মো. ফরিদকে আটক করে পুলিশ।

আটকের পর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হলে নগর পুলিশ এবং শীর্ষ পুলিশের কর্মকর্তারা কোতয়ালী থানায় ছুটে যান। পরস্পরের মধ্যে সমঝোতার ভিত্তিতে এস আই মাহবুবুরকে শিল্প পুলিশের কাছে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।

কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসীম উদ্দিন  বলেন, পুলিশ কমিশনার শিল্প পুলিশের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা মাহবুবুরকে শিল্প পুলিশের কাছে দিচ্ছি। লিখিত অভিযোগও তাদের দেয়া হচ্ছে। শিল্প পুলিশ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে।

জানা গেছে, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের কর্মকর্তা জিয়াউল করিম বুধবার গভীর রাত দেড়টার দিকে নগরীর সুগন্ধার কার্যালয় থেকে বেরিয়ে হালিশহরে বাসায় যাচ্ছিলেন। পাঁচলাইশে সুগন্ধা আবাসিক এলাকার সামনে থেকে একটি রাইডার হিউম্যান হলারে উঠে তিনি টাইগার পাস এলাকায় গিয়ে নামেন।

সেখানে একটি সিএনজি অটোরিকশা ভাড়া করে জিয়াউল হালিশহরের দিকে রওনা হচ্ছিলেন। এসময় মাহবুবুর ও ফরিদ এসে তারাও হালিশহরে যাবে বলে জিয়াউলকে কনভিন্স করে তার অটোরিকশায় ওঠেন।

অটোরিকশা কিছুদূর যাবার পর মাহবুবুর নিজেকে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য পরিচয় দিয়ে তার কাছে মাদক আছে অভিযোগ করে গ্রেফতারের ভয় দেখান।

এসময় মাহবুবুর অটোরিকশাকে কদমতলীর দিকে যাবার নির্দেশ দেয়। অটোরিকশা কদমতলী পৌঁছানোর পর মাহবুবুর ও ফরিদ মিলে জিয়াউলকে নিয়ে কয়েক ঘণ্টা রেলস্টেশন এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। ভোরে জিয়াউলকে নিয়ে তারা স্টেশন রোডে মার্টিন হোটেলে যান। সেখানে জিয়াউলকে আটকে মাহবুবুর ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে অন্যথায় গ্রেফতারের হুমকি দেন।

জিয়াউল টাকা দেবার কথা বলে সকাল ৯টার দিকে তাদের নিয়ে জুবিলি রোডে ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখায় যায়। সেখানে যাবার পর জিয়াউল জানায় তার অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই। এক বন্ধু কিছুক্ষণের মধ্যে টাকা অ্যাকাউন্টে দেবে।

মাহবুবুর ও ফরিদ মিলে ব্যাংকের টাকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন। এর এক ফাঁকে জিয়াউল কোতয়ালী থানায় ফোন করে বিষয়টি জানান। সকাল ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে তিনজনকে থানায় নিয়ে আসেন।

কোতয়ালী থানার পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, মাহবুবুর ও ফরিদ উভয়ই মাদকাসক্ত। শিল্প পুলিশের কর্মকর্তারা জানান, মাদক সেবন এবং দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুই বছর আগে মাহবুবুরকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছিল। নয় মাস পর চাকুরি ফেরত পেয়ে শিল্প পুলিশে বদলি হন।

কোতয়ালী থানায় গিয়ে দেখা গেছে, মাহবুবুর সেকেন্ড অফিসারের টেবিলের পাশে চেয়ারে বসে টেবিলে মাথা রেখে ঘুমাচ্ছেন। সহযোগী ফরিদকে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে।

শিল্প পুলিশের গোয়েন্দা ইউনিটের পরিদর্শক আরিফুর রহমান বলেন, তাকে ধরে এনেছে কোতয়ালী থানা। তারাই আইনগত ব্যবস্থা নেবে।

এসএইচএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।