দ্বিতীয়বারের মতো কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শি জিনপিং
দ্বিতীয়বারের মতো চীনের কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হলেন শি জিনপিং। আবারও পাঁচ বছরের জন্য তিনি দেশটির সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। গত কয়েক দশকের মধ্যে নিজের শক্তিশালী অবস্থানের মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক চীনের প্রতিষ্ঠাতা মাও সেতুংয়ের কাতারে চলে এলেন জিনপিং। খবর এএফপি।
ফলে সংবিধানে জিনপিংয়ের নাম এবং তার মতবাদ অন্তর্ভূক্ত হচ্ছে। চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টির (সিসিপি) ১৯তম বার্ষিক কংগ্রেসের শেষে শি জিনপিংয়ের নাম ঘোষণা করা হয়। রাজধীনী বেইজিংয়ে কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে দুই হাজারের বেশি প্রতিনিধি অংশ নেন।
গ্রেট প্যালেস হলে ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পর ৬৪ বছর বয়সী জিনপিং বলেন, ‘আমরা একটি মহান যুগে বাস করছি। আমরা এখন আরো অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী, গর্বিত। আমাদের ওপর অনেক দায়িত্ব রয়েছে।’
চীনের পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটির (পিএসসি) রুদ্ধদ্বার ভোটে শি জিনপিং নির্বাচন হয়েছেন। শি জিনপিংসহ পিএসসির সাত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরা হলেন, শি জিনপিং, লি কেকিয়াং, লি ঝানশু, ওয়াং ইয়াং, ওয়াং হুনিং, ঝাও লেজি এবং হ্যান ঝেং।
দলের ভাবধারায় মাও সেতুংয়ের পর এই প্রথম কোনো নেতার নাম অন্তর্ভূক্ত হলো। তবে মাওয়ের মৃত্যুর পর ১৯৮০ সালে চীনের অর্থনীতিতে ডেং শিয়াওপিং থিওরির জন্য অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত হন ডেং শিয়াওপিং।
চীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হংকং সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজ’-এর অধ্যাপক উইলি লাম বলেন, ‘শি এখন চাইলে সারা জীবনের জন্য সম্রাট হয়ে থাকতে পারেন। তাঁর শরীর যত দিন সায় দেবে, চাইলে ততদিনই তিনি ক্ষমতায় থাকতে পারবেন।’ পার্টি কংগ্রেসের পরে পরিস্থিতি যা দাঁড়াল তাতে ২০২২ সালে দ্বিতীয় দফার শাসন শেষ হওয়ার পরেও ইচ্ছে হলে ক্ষমতায় থাকতে পারেন জিনপিং।
গত সপ্তাহে পার্টি কংগ্রেস শুরুর দিনে ‘চীনের নিজস্ব সমাজতন্ত্র’র কথা বলে বিশ্বকে বার্তা দেন শি। চীনা ভাবধারার সমাজতন্ত্র থেকে একচুলও সরবেন না বলে জানান তিনি। এটাই লিপিবদ্ধ হয়েছে সংবিধানে। শির বক্তব্য অনুযারী, ইউরোপীয় সমাজতন্ত্র যে আদর্শের পথে এগিয়েছিল, দীর্ঘমেয়াদে তা ব্যর্থ হয়েছে। তাই যে পথে চীনা সমাজতন্ত্র সাফল্য পেয়েছে, তাতেই আস্থা রাখার কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট।
‘নিজস্ব ভাবধারার সমাজতন্ত্রে’র পথে হাঁটতে গিয়ে জিনপিং একই সঙ্গে দু’টি কাজ করেছেন। একদিকে দুর্নীতি দমন অভিযানে শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের উপরে আধিপত্য রেখেছেন অন্য দিকে বাকস্বাধীনতায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। সেই সঙ্গেই দেশের নিরাপত্তার জন্য চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মিকে আরও শক্তিশালী করেছেন।
জিনপিং সহ যে সাতজন চীনের পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে (পিএসসি) নির্বাচিত হয়েছেন তাদের নিয়ে তৈরি হবে পলিটব্যুরোর স্ট্যান্ডিং কমিটি ‘অ্যাপেক্স ৭’।
টিটিএন/পিআর