গণহত্যা চললেও থেমে নেই মিয়ানমারে ইসরায়েলের অস্ত্র বিক্রি
রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও জাতিগত নিধনের অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে থাকা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে গোপনে প্রশিক্ষণ ও অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। মানবাধিকার কর্মীরা ইসরায়েলের দীর্ঘ এবং অস্ত্র সরবরাহের গোপন ইতিহাসের মুখোশ উন্মোচনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দুর্বৃত্ত রাষ্ট্র মিয়ানমারের সঙ্গে ইসরায়েলের এই গোপন অস্ত্র ব্যবসার বিষয়টি আবারো সামনে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিষেধাজ্ঞাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেশটির সেনাবাহিনীর কাছে অস্ত্র পাঠানোর তথ্য ফাঁস হওয়ার পর।
রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের জাতিগত নিধনে সেনাবাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে বলে মিয়ানমারের নিন্দা জানিয়ে আসছে জাতিসংঘ। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রাম পুড়িয়ে দিচ্ছে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে রাখাইন ছাড়া করতে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা ও পরিকল্পিত ধর্ষণ করছে। সেনাবাহিনীর বর্বর অভিযানের মুখে গত কয়েক সপ্তাহে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশে পালিয়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে না ইসরায়েল। কিন্তু সরকারি বিভিন্ন নথিতে দেখা যায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কাছে টহল নৌকা, বন্দুক ও অন্যান্য নজরদারি সামগ্রী বিক্রি করেছে। মিয়ানমারের বিশেষ বাহিনীকেও প্রশিক্ষণ দিয়েছে ইসরায়েল।
মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি শিগগিরই বন্ধের দাবিতে আগামী ৩০ অক্টোবর ইসরায়েলের পার্লামেন্টের সামনে প্রতিবাদের ডাক দিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা। ২০১৩ সালে দক্ষিণ সুদানে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার থেকে দেশটির বিদ্রোহীদের কাছেও অস্ত্র এবং নজরদারি সামগ্রী বিক্রি করেছিল ইসরায়েল। সুদানের এই গৃহযুদ্ধে প্রায় ৩ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
মানবাধিকারবিষয়ক আইনজীবী এইতে ম্যাক মিয়ানমারের সঙ্গে অস্ত্র বাণ্যিজ্যের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের দাবিতে ইসরায়েলের আদালতে একটি পিটিশন দায়ের করেছেন। অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তা এবং চুক্তিকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের তদন্তের গতি যাতে দ্রুত হয় সেলক্ষ্যেই তিনি এই পিটিশন দায়ের করেছেন।
আলজাজিরাকে তিনি বলেন, অনেক পশ্চিমা রাষ্ট্র অস্ত্র বিক্রি করছে। কিন্তু ইসরায়েল এ ক্ষেত্রে অনন্য; কেননা যেখানেই যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে; আপনি সেখানেই ইসরায়েলকে খুঁজে পাবেন।
যেসব কোম্পানি অস্ত্র বিক্রি করছে এবং যে কর্মকর্তারা এই ব্যবসার অনুমোদন দিচ্ছেন; তাদেরকে অবশ্যই জবাবদিহীতার মুখোমুখি হতে হবে। অন্যথায় এটি কেন বন্ধ হবে?
সূত্র : আল-জাজিরা।
এসআইএস/এমএস