রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ের পর দৌড়ের ওপর তিনি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১০:১৯ এএম, ০৮ অক্টোবর ২০১৭

আইনের প্রতি বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেছেন এক বাংলাদেশি। এ ঘটনার পর পুলিশ ওই বাংলাদেশিকে খুঁজছে। মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ওই নারীও তাদের একজন। রোববার বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

২৫ আগস্ট রাখাইন প্রদেশে সেনাবাহিনীর অভিযান শুরুর পর থেকে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে ‘জাতিগত নিধন প্রক্রিয়া’ হিসেবে বর্ণনা করেছে।

গত মাসে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার পর থেকে শোয়াইব হোসাইন জুয়েল (২৫) ও ১৮ বছর বয়সী রোহিঙ্গা নববধূ রাফিজা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। পুলিশ বলছে, রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করা জুয়েল মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর এলাকার বাসিন্দা।

সিঙ্গাইর পুলিশের প্রধান খন্দকার ইমাম হোসাইন এএফপিকে বলেন, ‘আমরা শুনেছি, সে একজন রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেছে। আমরা তার খোঁজে চারিগ্রাম গ্রামে গিয়েছিলাম।’

কিন্তু সেখানে আমরা তাকে পাইনি এবং তার বাবা-মা জানেন না সে কোথায় আছে। এ ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের বিয়ের চেষ্টা করছে বলে ২০১৪ সালে অভিযোগ ওঠে। ওই সময় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বাংলাদেশি নাগরিকদের বিয়ে নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ সরকার।

জুয়েলের বাবা বাবুল হোসাইন বলেন, এ সময় তার ছেলের বিয়ের উদ্দেশ্য নাগরিকত্ব নয়। রাফিজাকে বিয়ের করায় ছেলের সাফাই গান তিনি।

বাবুল হোসাইন বলেন, ‘বাংলাদেশিরা যদি খ্রিষ্টান ও অন্যান্য ধর্মের মানুষকে বিয়ে করতে পারে, তাহলে একজন রোহিঙ্গাকে বিয়ে করে আমার ছেলে কী ভুল করেছে? সে একজন মুসলিমকে বিয়ে করেছে; যে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।’

সাম্প্রতিক সহিংসতায় মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রাফিজার প্রেমে পড়েন পেশায় মাদরাসা শিক্ষক জুয়েল। রাফিজার পরিবার সিঙ্গাইরে ধর্মীয় এক নেতার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে সিঙ্গাইর থেকে ২৬৫ মাইল দূরে কক্সবাজারের প্রধান শরণার্থী শিবিরে ফিরে যেতে বাধ্য হয় রাফিজার পরিবার।

প্রেমে মগ্ন জুয়েল কক্সবাজারের এক শরণার্থী শিবির থেকে অপর শরণার্থী শিবিরে হন্যে হয়ে খুঁজছেন রাফিজাকে। অনেক খোঁজাখুজির পর সেখানে এক শিবিরে রাফিজাকে খুঁজে পান জুয়েল। পরে মেয়েকে তার হাতে তুলে দিতে রাফিজার বাবা-মাকে অনুরোধ জানান জুয়েল।

গত আগস্টে রোহিঙ্গাদের ঢল শুরুর পর থেকে এই প্রথম কক্সবাজারে কোনো বাংলাদেশির সঙ্গে রোহিঙ্গা নারীর বিয়ের খবর এল।

সূত্র : এএফপি।

এসআইএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।