ইভটিজিং করলেই সেলফি তোলেন যে তরুণী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:১৯ এএম, ০৬ অক্টোবর ২০১৭

ধরুন আপনি নারী। জরুরি কোনো কাজে বের হতে হয়। কিন্তু আপনি পথে পথে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। আপনাকে দেখে কেউ ইভটিজিং করছেন, কেউ আজেবাজে মন্তব্য করছেন, কেউ আপনাকে দিচ্ছেন কুপ্রস্তাব। কেউবা দিচ্ছেন উচ্চস্বরে শিস!

কী করবেন? চুপ করে থাকবেন না প্রতিবাদ করবেন? কয়জনই বা প্রতিবাদ করতে পারেন? বেশিরভাগ নারীই নীরবে সয়ে যান চলার পথের এই গঞ্জনা।

selfie

আপনি বেশি সংবেদনশীল হলে হয়ত প্রতিক্রিয়া দেখাবেন কিংবা কষ্ট পাবেন। প্রতিবাদ করতে গেলে আবার অনেক সময় নাজহাল হতে হবে। ফলাফল হতে পারে উল্টো। কিন্তু প্রতিবাদের ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নেদারল্যান্ডের ২০ বছর বয়সী ছাত্রী নোয়া জ্যান্সমা (Noa Jansma)। পথের মাঝে যখন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন কৌশলে সেইসব বখাটের সঙ্গে সেলফি তুলে পোস্ট করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে।

selfie

আমস্টারডামের ওই ছাত্রী সেলফি তোলার বিষয়টি একমাস ধরে করে যাবেন বলে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন। নোয়া বলেন, পথের মাঝে যারা আমাকে উত্ত্যক্ত করে আমি আসলেই জানতাম না আমার করণীয় কী? আমি যদি তাদের বিপক্ষে যাই তাহলে পরিস্থিতি আরো মারাত্মক হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, যারা উত্ত্যক্ত করে আমি তাদের এড়িয়ে চলি না। বরং কৌশলে তাদের সঙ্গে সেলফি তুলি। অনেক পুরুষ ছবি তোলার প্রস্তাবে গর্ববোধ করেন বলে জানান নোয়া।

যাদের সঙ্গে ছবি তুলি তারা আদৌও জানে না এই ছবিগুলো কী করা হবে? অনেকে জিজ্ঞাসা করলেও তাদের উত্তর দেন না নোয়া।

selfie

তবে নোয়া তাদের প্রতি মানবিক থাকতে চান। তার ভাষ্য : এই ছবি তোলার উদ্দেশ্য ওই সব পুরুষদের লজ্জা দেওয়া নয়। এর পেছনে রয়েছে একটা বার্তা পৌঁছানোর ইচ্ছা।

‘যদি ওই মানুষেরা ইনস্টাগ্রাম থেকে ছবি সরিয়ে নিতে আমাকে অনুরোধ জানায় আমি তাই করব। আমি চাই না তাদের জীবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাক।’

নোয়ার ইনস্টাগ্রামে দেখা গেছে, শুধু ছবি নয়। ছবির সঙ্গে ছোট করে ক্যাপশনও জুড়ে দিয়েছেন। প্রথম এক ছবির ক্যাপশন : হুম, তুমি কি আমাকে চুমু খাবে?

selfie

উত্ত্যক্তকারীর ছবি দিয়ে অপর এক ক্যাপশনে বলা হয়েছে : হে সেক্সি গার্ল তুমি একা একা কোথায় যাচ্ছো?

এক যুবকের ছবি দিয়ে নোয়া জানিয়েছে, লোকটা রাস্তায় তাকে ১০ মিনিট ধরে অনুসরণ করছিল। এর একপর্যায়ে আমাকে বলে, সেক্সি গার্ল তুমি কোথায় যাচ্ছো? আমি কি তোমার সঙ্গে আসতে পারি?’

selfie

নোয়া বলেন, ‘নারী প্রতিনিয়ত চলার পথে হয়রানির শিকার হচ্ছে। এটা বিশ্বজনীন সমস্যা। পুরো পৃথিবীতে এরকম ঘটছে। আমি নারীদের সচেতন করে তুলতেই একমাসের এরকম উদ্যোগ নিয়েছি।’

আমার বিশ্বাস আমি অন্য কোনো দেশ কিংবা অন্য কোনো শহরের তরুণীদের কাছে সচেতন হওয়ার এই বার্তাাটি পৌঁছে দিতে পারব। প্রতিদিনকার জীবনের কোনো না কোনো সময় নারী এরককম সমস্যার মুখোমুখি হন। সূত্র : বিবিসি।

একে/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।