রমজানের আগেই রাজশাহীর বাজারে আগুন


প্রকাশিত: ১১:২৩ এএম, ১৮ জুন ২০১৫

রমজান এলেই রাজশাহীর বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে হিমশিম খায়। অন্যান্য বছরের মতো এবারও নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর হিড়িক পড়েছে। কিন্তু রোজা উপলক্ষে বিগত বছরের চেয়ে আগে ভাগেই কয়েকদফা বেড়েছে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্যের দাম।

এ বিষয়ে কয়েকজন ভোক্তা অভিযোগ করে বলেন, রমজানের এক থেকে দেড় মাস আগেই নিত্যপণ্যের দাম কয়েকবার বাড়ানো হয়েছে। এরপর রোজা শুরু হলে ভোগ্যপণ্যের দাম আরো বাড়ার আশঙ্কা করছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতারা বলেছেন, রমজান উপলক্ষে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হয়নি। কিছু পণ্যের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বাড়ার কারণে এক থেকে দুই মাস আগেই বেড়েছে। বিক্রেতাদের এমন মন্তব্যে রমজানের মধ্যে ভোগ্যপণ্যের দাম ফের বাড়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান ক্রেতা ও বিক্রেতারা।


 
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর সাহেব বাজার, কোর্টবাজার, লক্ষীপুর বাজার, বিনোদপুর বাজার, শালবাগানসহ বিভিন্ন খুচরা ও পাইকারি বাজার ঘুরে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বিক্রেতা ও সংশ্লিষ্টরা জানায়, এখন প্রতি কেজি আলু ২০/২২টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, পটোল ৩০টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, শসা ৩০/৩২ টাকা, করলা ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৩৫ টাকা, লেবু প্রতি হালি ১৬/২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আর এক মাস আগেই প্রতি কেজি ছোলার দাম ১০ টাকা বাড়নো হয়েছে। বাজারে এখন ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। একই সময়ে সব ধরনের ডালের দাম প্রতি কেজিতে ৫ থেকে ৭ টাকা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে মশুর ডাল (দেশি) প্রতি কেজি ১১০ থেকে ১২০ টাকা, বিদেশি বড় দানার মশুরের ডাল ১০৫ টাকা ও নেপালি ডাল ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



এদিকে, প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ১০/১২টাকা। সব ধরনের রসুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ও ভারতের রসুন ৯০ থেকে ১১০ টাকা। এছাড়া চিনিতে এক মাস আগেই প্রতি কেজিতে বেড়েছে ২/৩ টাকা। আলুর দামও বেড়েছে প্রতি কেজিতে ৫ টাকা। অন্যদিকে, মাছ, মুরগি ও কাঁচা বাজারের বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।

নগরীর সাহেব বাজার এলাকার মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই, বোয়াল, শিং, পাবদা ও ইলিশসহ সব ধরনের মাছের দাম প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ৮০ টাকা বেড়েছে। নিয়ম থাকলেও বিভিন্ন বাজার ঘুরে কম সংখ্যক দোকানেই পণ্যের মূল্য তালিকা পাওয়া যায়।

নগরীর সাহেব বাজার ঘুরে দেখা যায়, বোয়াল মাছ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ইলিশ প্রতি এক কেজির কাছাকাছি ৮০০ থেকে হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাবদা প্রতি কেজি এক হাজার ১২০০ টাকা, শিং মাছ ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।



এছাড়াও গরুর মাংস প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, খাসি ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকা, বয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা ও দেশি মুরগি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ভারত থেকে গরু না আসায় রমজানের মধ্যে গরুর মাংসের দাম আরো বাড়বে বলে জানান মাংস বিক্রেতা রহিম।

তবে নগরীর সাহেব বাজারে আসা ইয়াহিয়া সরকার নামের এক ঠিকাদার জানান, রমজান শুরু আগে কাঁচা সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস ও মসলার দাম অনেক বাড়তি। রমজান শুরু হলে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আরো কয়েক দফা বাড়তে পারে বলে তিনি আশংঙ্কা করছেন।

এদিকে, নগরীর মাস্টার পাড়ার সবজি বিক্রেতা রহমান জানান, গত কয়েক দিনে সবজির দাম বাড়েনি। তবে উজানের পানি নেমে আসা শুরু হওয়ায় রমজানে কাঁচা মরিচ ও বেগুনের দাম কয়েকগুণ বাড়তে পারে।   

শাহরিয়ার অনতু/এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।