রোহিঙ্গাদের জন্য ছয় মাসে প্রয়োজন ৫৯০ মিলিয়ন ডলার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:০৬ এএম, ০৪ অক্টোবর ২০১৭

রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের আগামী ছয় মাস সাহায়তার জন্য পাঁচশ ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রয়োজন। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সাহায়তায় নিয়োজিত সংস্থাগুলো বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে।

সংস্থাগুলোর দাবি, এক দশমিক দুই মিলিয়ন অর্থাৎ ১২ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা দরকার। যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু; তাদের জীবন বাঁচাতে এ পরিমাণ সাহায্যের প্রয়োজন।

গত ২৫ আগস্টের পর রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর তাণ্ডবে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। ফলে আগে থেকেই বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া তিন লাখ রোহিঙ্গাসহ মোট শরণার্থীর সংখ্যা অাট লাখ নয় হাজার।

rohingya

কক্সবাজারে আশ্রয়কেন্দ্রে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা খুবই নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে এবং তাদের অনেকেই মানসিক রোগে ভুগছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক রবার্ট ওয়াটকিনস।

তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ঢল যেহেতু এখনো থামেনি, সে কারণে আরও ৯১ হাজার রোহিঙ্গা আসার আশঙ্কা করছে সাহায্যকারী সংস্থাগুলো।'

২৫ আগস্টের পর থেকে রাখাইনে চলমান সহিংসতায় সারাবিশ্বের কাছে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে মিয়ানমার। ত্রাণ কর্মীদের বাধা দেয়ার পর সমালোচনার ঝড় আরও বেড়ে যায়।

রাখাইনের সহিংসতাকে পাঠ্যপুস্তকে উল্লিখিত জাতিগত নিধনযজ্ঞের উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘের ১৫ টি সংস্থার পরিচালকদের গত সপ্তাহে মিয়ানমার সফরের কথা থাকলেও আবহাওয়া খারাপের অযুহাতে তা বাতিল করে দেয় মিয়ানমার।

rohingya

অবশেষে সোমবার বিদেশি কূটনীতিকদের রাখাইন রাজ্যে নিয়ে গেছে শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী অং সান সুচির সরকার। এর আগেও সাংবাদিকদের একটি দলকে রাখাইন রাজ্যের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে নিয়ে গিয়েছিল দেশটি। তারা রাখাইনের সহিংসতার অনেক চিত্রই তুলে নিয়ে এসেছিলেন।

সাহায্যকারী সংস্থাগুলো বলছে, পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার মধ্যে এক লাখের জরুরিভিত্তিতে আশ্রয় প্রয়োজন। শরণার্থীদের মধ্যে অর্ধেকের বেশিই শিশু, এছাড়া নারীর সংখ্যাও কম নয়। ২৪ হাজার গর্ভবতী রোহিঙ্গার জন্য জরুরি মাতৃ স্বাস্থ্যসেবা দরকার।

সংস্থাগুলোর দাবি, জরুরি ভিত্তিতে তাদেরকে সহায়তা করা প্রয়োজন। যদি শিগগিরই পর্যাপ্ত পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশের ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে রোগবালাই ছড়িয়ে পড়বে। মহামারী দেখা দেয়ারও আশঙ্কা প্রকাশ করেছে সংস্থাগুলো।

rohingya

এদিকে যাচাই-বাছাইয়ের পর মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার কথা বলেছে। তবে মিয়ানমার সরকারের আশ্বাসে ফেরার ভরসা পাচ্ছে না রোহিঙ্গারা।

৬০ বছর বয়সী আমিনা খাতুন বলেন, ‘অামরা যদি সেখানে ফিরে যাই, আবার আমাদের এখানে ফিরে আসতে হবে। তারা যদি আমাদের নাগরিক অধিকার দেয়, তাহলে আমরা যাব; এর আগে যারা ফিরে গেছে, তাদের আবার পালিয়ে আসতে হয়েছে।’

গত মাসে আনোয়ারা বেগম নামের একজন রয়টার্সকে বলেছিলেন, তিনি তৃতীয়বারের মতো পালিয়ে এসেছেন। ১৯৭৮ সালে একবার পালিয়ে এসে কয়েক বছর পর ফিরে যান তিনি; এরপর ১৯৯১ সালে আবার পালিয়ে এসে ১৯৯৪ সালে ফিরতে পারেন। তবে ২০১৭ সালে তাকে আবারও পালিয়ে আসতে হয়েছে।

সূত্র : দ্য স্ট্রেইটস টাইমস

কেএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।