মিয়ানমারে ফিরে লড়াই করতে চায় রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:৩৩ এএম, ০৩ অক্টোবর ২০১৭

মিয়ানমার সীমান্তের কাছে শরণার্থী শিবিরে গোয়েন্দা পুলিশ মোতায়েন করেছে বাংলাদেশ। এই শরণার্থী শিবিরে রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা আশ্রয় নিয়েছে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা বলছেন, তারা শতাধিক সদস্য সংগ্রহ করেছেন; যারা মিয়ানমারে ফিরে নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আগ্রহী।

রোহিঙ্গাদের ঢল শুরু হওয়ার আগে থেকেই বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ সমস্যা মোকাবেলা করছে। বাংলাদেশ বলছে, নতুন করে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে কোনো চরমপন্থী নেই।

কিন্তু রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসার) স্বঘোষিত কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা বলেছে বার্তাসংস্থা এএফপি। রাখাইনের পুলিশ পোস্টে গত ২৫ আগস্টের হামলার সঙ্গে আরসা জড়িত। রাখাইনের এ হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু হয়। এ অভিযানকে জাতিগত নিধনের সঙ্গে তুলনা করেছে জাতিসংঘ।

অস্থিরতা ঘিরে সেনাবাহিনীর অভিযানের মধ্যে প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের দলে ভেড়াতে কাজ করছে নিয়োগকারীরা। তাদের দাবি, তারা শতাধিক রোহিঙ্গা বিদ্রোহীকে তালিকাভূক্ত করেছেন; যারা মিয়ানমারে ফিরে লড়াই করতে আগ্রহী; যেখানে দশকের পর দশক ধরে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।

রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের এই দাবির সত্যতা যাচাই করা যায়নি। তবে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করেছে।

আরসার সদস্য সংগ্রহকারী মোহাম্মদ হালিম নামের এক রোহিঙ্গা এএফপিকে বলেন, স্বেচ্ছাসেবীদের যুদ্ধ, সামরিক কৌশল ও অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তবে তারা নিরস্ত্র আছেন বলে দাবি করেছেন।

পরিচয় গোপন রেখে ছদ্মনাম ধারণ করে কক্সবাজারের এক তাঁবুতে হালিম বলেন, সব প্রশিক্ষণ নিরর্থক মনে হচ্ছে, কারণ আমাদের কাছে অস্ত্র নেই।

তিনি বলেন, ‘আমাদের যদি অস্ত্র থাকত, তাহলে লড়াই করার জন্য আমরা মিয়ানমারে ফিরে যাইতাম...আমরা সেনাবাহিনীকে হটিয়ে দিতাম এবং আমাদের ভূমি উদ্ধার করতাম।’

আরসা বলছে, তারা বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে কয়েক দশকের নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গত আগস্ট এবং গত বছরের অক্টোবরের হামলা চালিয়েছে। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাফেরার স্বীকৃতি এবং নাগরিকত্ব নেই। কিন্তু আরসার ওই হামলার পর সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা রাখাইন ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।

আরসাকে মিয়ানমার সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটির নেতৃত্বে আছেন পাকিস্তানি রোহিঙ্গা পরিবারে জন্ম নেয়া আতা উল্লাহ। বর্তমানে আরসার এই নেতা সৌদি আরবে বসবাস করছেন। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরা বাইরের জঙ্গিসংগঠনগুলোর সমর্থন দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাখ্যান করে আসছেন।

কিন্তু পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ২০১২ সালে মুসলমান ও রাখাইন বৌদ্ধদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পর থেকে দমনমূলক সীমাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।