আহত রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২৬ এএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে রোহিঙ্গারা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসা এসব রোহিঙ্গার মধ্যে অনেকেই সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নির্যাতনে আহত হয়ে এখন বাংলাদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন। জীবন বাজি রেখে তারা এ দেশে পালিয়ে এসেছেন।

এসব আহত রোহিঙ্গার চিকিৎসা দিচ্ছেন বাংলাদেশের কক্সবাজারের সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তবে একসঙ্গে এতো রোহিঙ্গার চিকিৎসা করাতে গিয়ে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

সদর হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছে সাত বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা কিশোর। সে সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছে। সেনারা তার বুকে গুলি করেছিল। গুলি বের করে ক্ষত স্থানে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে।

jagonews24

যে কয়েকজন সেনাদের গুলিতে আহত হয়েছে তাদের মধ্যে এই কিশোরই সবচেয়ে ছোট। সংবাদমাধ্যম এপির কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ওই কিশোরের বাবা আবু তাহির জানিয়েছেন, গ্রামে ঢুকে সেনারা গুলি করতে শুরু করল। আমি দেখলাম যে আমার ছেলে মেঝেতে পড়ে আছে।

ওই কিশোরের মতো আরও ৮০ জন রোহিঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই পুরুষ, যাদের বেশিরভাগই সেনাবাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছে।

জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নিপীড়ন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৩ লাখ রোহিঙ্গা।

প্রচণ্ড বিশৃঙ্খলার মধ্যেই তাহির তার ছেলেকে নিয়ে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পৌঁছাতে সক্ষম হন। কিন্তু তাদের পুরো পরিবার কোথায় আছে তা তারা জানেন না। ছেলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে এমনটাই এখন তার একমাত্র প্রার্থনা।

কক্সবাজার এলাকায় রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবায় সদর হাসপাতালই এখন একমাত্র ভরসা। শত শত রোগীর চিকিৎসা করছেন মাত্র ২০ জন চিকিৎসক।

এই প্রথমবারের মতো গুলিতে আহত, পুড়ে যাওয়া বা ছুরিকাঘাতে আহত এত মানুষকে একসঙ্গে সেবা দিতে হচ্ছে চিকিৎসকদের।

jagonews24

হাসপাতালের প্রধান ড. শাহিন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, সহিংসতায় আহত এতো রোগীকে একসঙ্গে আগে দেখিনি আমরা। এর আগে দেশে এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়নি তাদের।

গত ২৫ আগস্ট বেশ কয়েকটি পুলিশ চেক পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাখাইন রাজ্যে সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার।

তারপর থেকেই সেখানে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর অত্যাচার, নিপীড়ন শুরু হয়। সাধারণ নাগরিকদের বাড়ি-ঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে সেনারা। জীবন বাঁচাতে দলে দলে রোহিঙ্গারা দেশ থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে।

দ্বিতীয়বারের মতো সহিংসতা শুরু হওয়ার পর প্রথম সপ্তাহে সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা প্রায় ৩০ জন আহত রোহিঙ্গার চিকিৎসা করেছেন। এরা সবাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। এখন রোহিঙ্গাদের জন্য আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করেছে হাসপাতাল কতৃপক্ষ।

শাহিন আবদুর রহমান চৌধুরী বলেন, রোহিঙ্গাদের চিকিৎসার জন্য আরও অর্থ সহায়তা প্রয়োজন।

টিটিএন/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।