রোহিঙ্গাদের সমস্যা সমাধানে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে তেহরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৫৫ পিএম, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতিত সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্ষায় মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বাহরাম কাসেমি বলেছেন, মিয়ানমারের মজলুম মুসলমানদের সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে তেহরান।

তিনি বলেন, চলতি ২০১৭ সালের শুরুতেও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেসের কাছে চিঠি লিখে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এখনও রোহিঙ্গা মুসলমানদের সমস্যা সমাধানের বিষয়টি ইরানের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে।

বাহরাম কাসেমি আরও বলেছেন, ‘আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বিশেষ করে জাতিসংঘে রোহিঙ্গা ইস্যুটি উত্থাপনের চেষ্টা করছি। সব মিলিয়ে বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এটি এখন শুধু মুসলমান নয়, গোটা বিশ্বের মানুষ ও সরকারের কাছেই মানবিক ইস্যু হিসেবে রোহিঙ্গা গণহত্যা গুরুত্ব পাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এর আগে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসিতেও পরিকল্পিত নৃশংসতার বিষয়ে মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলাম। আমরা বলেছিলাম রোহিঙ্গাদের রক্ষা করা সব মুসলিম দেশের দায়িত্ব।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইরানের কূটনৈতিক তৎপরতা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা-নির্যাতন বন্ধের উপায় নিয়ে তুরস্ক, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন এবং অন্য মুসলিম দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গেও তিনি এ বিষয়ে কথা বলবেন।’

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রোহিঙ্গা গণহত্যা বন্ধের উপায় তুলে ধরে বলেন, ‘মুসলিম দেশগুলো যদি ঐক্যবদ্ধভাবে রোহিঙ্গা গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তাহলে ঘাতকরা পিছু হটতে বাধ্য হবে।’

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশের ৩০টি তল্লাশি চৌকিতে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলায় ১২ পুলিশ নিহতের পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন কঠোর অভিযান শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সহিংসতায় রাখাইনে অন্তত ৪০০ রোহিঙ্গার প্রাণহানি ঘটেছে।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর’র সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত ১২ দিনে বাংলাদেশে প্রায় এক লাখ ৪৬ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে। গত বছরের অক্টোবরে রাখাইনে একই ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সেসময়ও রোহিঙ্গাদের ঢল নামে বাংলাদেশ সীমান্তে। দুই দফার এ সহিংসতায় বাংলাদেশে প্রায় দুই লাখ ৩৩ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে রাখাইনে বাড়ি-ঘর ধ্বংস ও অত্যধিক বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

তবে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বলছে, তারা রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। এই বিদ্রোহীরা রাখাইনে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে।

বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।