‘রাখাইনে জাতিসংঘের কোনো সংস্থাই প্রবেশ করতে পারছে না’
মিয়ানমারের সরকার বাধা দেয়ায় রক্তাক্ত সামরিক অভিযানের কেন্দ্রস্থলে নিপীড়িত হাজার হাজার বেসামরিক মানুষকে খাবার, পানি ও ওষুধের প্রয়োজনীয় সরবরাহ করতে পারছে না জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সহযোগী সংস্থা। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানের অনুসন্ধানী এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, সেখানে জাতিসংঘের সব সহযোগী দাতা সংস্থার ওপর অবরোধ আরোপ করেছে মিয়ানমার।
গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে বিদ্রোহীদের হামলার পর থেকে সেখানে ব্যাপক রক্তক্ষয়ী অভিযান শুরু করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এতে অন্তত চার শতাধিক রোহিঙ্গা মুসলিমের প্রাণহানি ঘটে। সেনা অভিযান শুরুর পর থেকে রাখাইনে ত্রাণসহায়তা স্থগিত রেখেছে জাতিসংঘ।
মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের অফিস দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং সরকারের আরোপিত বিধি-নিষেধের কারণে আমাদের ত্রাণসহায়তা কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ ত্রাণসহায়তা কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতিও দেয়নি।
জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কের অফিস বলছে, যত দ্রুত সম্ভব মানবিক ত্রাণসহায়তা কার্যক্রম শুরু করার লক্ষ্যে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিবিড় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে জাতিসংঘ। তবে রাখাইন রাজ্যের অন্যান্য অংশে সহায়তা অব্যাহত রয়েছে।
কয়েক দশকের মারাত্মক প্রাণঘাতী সহিংসতায় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যার অভিযোগ উঠেছে দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়েছেন; এদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর, জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) কর্মীরা গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে কোনো ধরনের কাজ করতে পারছে না। জীবন রক্ষাকারী এই ত্রাণসহায়তা সেখানে স্থগিত রাখায় রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি দরিদ্র বৌদ্ধদের ওপরও প্রভাব পড়ছে।
এসআইএস/এমএস