ধর্ষক গুরু কারাগারে : কার হাতে যাচ্ছে ডেরার দায়িত্ব?
সোমবার রোহতকের কারাগারে রাম রহিমের ২০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩০ লাখ রুপি জরিমানার রায় দেন সিবিআই’র বিচারপতি জগদ্বীপ সিং।
রোহতকের সুনারিয়া কারাগারে নেয়ার পর থেকেই এই কয়েদির নাম্বার ১৯৯৭। রায় ঘোষণার পর তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। পরে তাকে সাধারণ কয়েদিদের পোশাক পরানো হয়েছে। রাতে পানি খেয়ে শুয়ে পড়ে সকালে উঠে দুধ খেয়েছেন রাম রহিম।
রাম রহিমের ভক্তদের তাণ্ডবে এখন পর্যন্ত ৩৮ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন আড়াই শতাধিক লোক। তবে রাম রহিমের বাইরেও তার ডেরা সাচ্চা সৌদা এবং দত্তক নেয়া মেয়ে হানিপ্রীত ইনসানকে নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
শুক্রবার রাম রহিম দোষী সব্যস্ত হওয়ার পর কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময়ও তিনি ছিলেন রাম রহিমের সঙ্গে হেলিকপ্টারে। এমনকি, কারাগারে বাবা রাম রহিমের সঙ্গে রাত্রিবাসও করতে চান তিনি।
কিন্তু কারাগারে কোনো সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তির সঙ্গে নারীকে থাকতে দেয়া যায় না বলে অধিকারিকরা বাধ সাধেন। তাতে ক্ষিপ্ত হন রাম রহিম।
২০১১ সালে এই নারীর স্বামী রাম রহিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন, হানিপ্রীতের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে ভণ্ড বাবার। তবে পরে পারিবারিকভাবে বিষয়টি মিটিয়ে ফেলা হয়।
হানিপ্রীতকে নিয়ে সবচেয়ে বড় যে জল্পনা লুকিয়ে রয়েছে, তা হল রাম রহিমের পর তিনিই হতে চলেছেন ডেরা সাচ্চা সৌদার প্রধান। কারণ রাম রহিমের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে হানিপ্রীতই ধর্ষক রাম রহিমের সবচেয়ে কাছের।
প্রভাবশালী এই সংগঠনের অবৈধ সকল অস্ত্রশস্ত্রও হানিপ্রীতের কাছেই রয়েছে বলে জল্পনা তুঙ্গে। কিন্তু কে এই হানিপ্রীত?
প্রিয়াঙ্কা তনেজা নাম ছিল তার। ১৯৯৯ সালে ডেরারই এক শিষ্য বিশ্বাস গুপ্তকে বিয়ে করে তিনি নাম পরিবর্তন করেন। নতুন নাম হয় হানিপ্রীত ইনসান।
বিয়ের পরে হানিপ্রীত অভিযোগ করেন, বিশ্বাসের পরিবার তার উপর নির্যাতন করছে। তখন গুরু রাম রহিম হানিপ্রীতকে দত্তক নেন। তবে গুঞ্জন রয়েছে, হানিপ্রীতকে আগে ধর্ষণ করেছিলেন রাম রহিম। সেই দুর্নাম ঢাকতেই তিনি হানিপ্রীতকে দত্তক নেন।
নিজেকে ‘পাপা’স অ্যাঞ্জেল’, সমাজসেবী, পরিচালক, চিত্র সম্পাদক, অভিনেত্রী বলে পরিচয় দেন হানিপ্রীত। তার দাবি, ‘রকস্টার বাবার’ নির্দেশকে কাজে পরিণত করাই তার কাজ। নিজেকে বাবার মতোই সমান গুণের অধিকারী বলে দাবি হানিপ্রীতের।
রাম রহিম সিং অবশ্য হরজিৎ কৌরকে বিয়ে করেছেন। তাদের দুই মেয়ে রয়েছে; তাদের নাম চরণপ্রীত ও আমনপ্রীত। দু’জনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। আর আছে এক ছেলে জসমীত।
কে ধর্ষক বাবার পরে ডেরার দায়িত্ব হাতে নেবেন, তা নিয়েই চর্চা তুঙ্গে। দেখা যাক শেষাবধি কী ঘটে।
কেএ/আইআই
