রেখে গেলেন সুস্থ, ফিরে এসে পেলেন মায়ের কঙ্কাল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৩ এএম, ০৮ আগস্ট ২০১৭

গত বছর এপ্রিলে শেষ বারের মতো কথা হয়েছিল বিদেশে থাকা ছেলের সঙ্গে। তখনই ছেলের কাছে দুঃখ করে বলেছিলেন বড্ড একা লাগে তার। ওয়েলস কট সোসাইটির বহুতল ভবনে একাকী জীবন নিয়ে বেশ হতাশ ছিলেন তিনি।

একাকিত্ব কাটাতে ছেলের কাছে অনুরোধও করেছিলেন তাকে যেন বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসা হয়। এরপর বহু দিন আর মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি ছেলের। কিন্তু দেশে ফিরে মাকে এমন অবস্থায় দেখবেন তা কল্পনাতেও ভাবেননি ছেলে। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছেলে বহু বছর ধরেই বিদেশে ছিলেন।

রোববার সকালেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুম্বাইয়ের লোখণ্ডওয়ালার ওশিয়ারার ফ্ল্যাটে পৌঁছান ৪৩ বছরের ঋতুরাজ সহানি। ১৯৯৭ সালে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে চাকরি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ওই বহুতল ভবনের ১০ তলায় একা থাকতেন আশা সাহানি। ছেলেকেও বহুদিন ধরে কাছে পাননি।

রোববার যখন নিজেদের ফ্ল্যাটে পৌঁছালেন তখন ঋতুরাজ দেখেন ফ্ল্যাটের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। বারবার ডাকা সত্ত্বেও কেউ দরজা খুলছিল না। তড়িঘড়ি করে ফ্ল্যাটের তালা ভাঙেন তিনি। শোবার ঘরে গিয়ে দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে ৬৩ বছরের মায়ের মৃতদেহ। সেখানে মাংসের কণামাত্র অবশিষ্ট ছিল না। শুধুই পড়ে ছিল মায়ের কঙ্কাল। এরপরেই ওশিয়ারা থানায় খবর দেন ঋতুরাজ।

ওশিয়ারা থানার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা সুভাষ কনভিলকর জানিয়েছেন, সম্ভবত বহু দিন আগেই মারা গিয়েছেন আশা। তার শরীর খুবই ক্ষীণকায় থাকায় পচন ধরার কয়েক মাসের মধ্যে শুধু কঙ্কালই অবশিষ্ট ছিল। দেহে কোনও রকম আঘাতের চিহ্ন না থাকায় এবং দরজা ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় একে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে তার মৃতদেহ।

আশার প্রতিবেশীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দাবি, বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে কোনও রকম গন্ধ পাননি তারা। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে ঋতুরাজ তার মায়ের কোনওরকম খোঁজ খবর নেননি কেন, সেই প্রশ্নও উঠেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাকে।

টিটিএন/আইআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।