কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক : দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান


প্রকাশিত: ০২:০১ পিএম, ৩০ মে ২০১৫

বিদ্যুৎ, জ্বালানি সহ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং অন্যান্য খাতসমূহ ক্রমান্বয়ে উন্নতি করছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনাময়  একটি জায়গা। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এ দেশে জ্বালানি, চামড়া ও পোশাকসহ বিভিন্ন খাতে বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
 
শনিবার রাজধানীর এক হোটেলে বাংলাদেশে অবস্থানরত বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকদের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ ২০৩০ : নেক্সট বিলিয়ন ডলার অপরচুনিটিজ’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জাানান। সভার আয়োজন করেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।  
 
সভায়, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি)-বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআিই)-এর সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জু, এফবিসিসিআই’র নবনির্বাচিত প্রথম সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিনসহ দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা  মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
 
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ চলতি বছরে বাংলাদেশের রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ৩৩ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হলেও ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্জিত বলে আশা প্রকাশ করেন।

তোফায়েল আহমেদ বাংলাদেশকে বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় একটি জায়গা উল্লেখ করে বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি সহ নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং অন্যান্য খাতসমূহ ক্রমান্বয়ে উন্নতি করছে।

বিনিয়োগের জন্য জমির স্বল্পতার বিষয়টি স্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, এজন্য সরকার সারাদেশে ১৭টি ইপিজেড স্থাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। পোশাক খাত উন্নয়নে মুন্সীগঞ্জে তৈরি পোষাক খাতের জন্য একটি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপন করা হবে।

ডিসিসিআই সভাপতি হোসেন খালেদ তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জন্য জিডিপিতে বিনিয়োগের অবদান ২৮ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৩৮ শতাংশে উন্নিত করতে হবে।
 
তিনি আরো বলেন, ডিসিসিআই প্রাক্কলিত ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে কে পৃথিবীর ৩০তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে হলে প্রবৃদ্ধি হার ৬ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশ উন্নিত করতে হবে এবং জিডিপিতে বিনিয়োগের অতিরিক্ত অবদান ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে।
 
আইসিসি-বাংলাদেশ এর সভাপতি মাহবুবুর রহমান বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কে বাংলাদেশে জ্বালানি খাতে বেশি হারে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমাদের বিদ্যুৎ সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের দিকে আরো বেশি মনোনিবেশ করার প্রয়োজন।

আইসিসি-বাংলাদেশ’র সভাপতি জাপানি বিনিয়োগকারীদের এ দেশে আরো বেশি হারে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে হলে আমাদের দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই।

এমসিসিআইয়ের সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর বলেন, সারা বিশ্বের চামড়া শিল্পের বাজার মূল্য ২১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশের চামড়া খাতের ০.৫ শতাংশ মূল্যের চামড়াজাত পণ্য রফতানি করে থাকে। তিনি জানান- আমাদের জিডিপিতে চামড়া খাতের অবদান ২.১৯ শতাংশ। তিনি ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের শুল্কমুক্ত সুবিধা কাজে লাগিয়ে জন্য বিদেশি বিনিয়োগকারীদের এ খাতে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

এফবিসিসিআই’র নবনির্বাচিত প্রথম সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বিশ্বে তৈরি পোশাকের বাজারে বাংলাদেশের অবদান ৫.১১ শতাংশ । তিনি বলেন, আমরা যদি এ খাতের অবদানের হার ৮ শতাংশ উন্নতি করতে পারি, তাহলে ২০২১ সালের মধ্যে এ খাতে ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভবপর হবে।  

বেসিস-এর সভাপতি শামীম আহসান বলেন, বাংলাদেশ সরকার তথ্য-প্রযুক্তি খাতে ২০১৮ সাল পর্যন্ত শুল্ক মুক্ত সুবিধা প্রদান করেছে। এ সুযোগ গ্রহণ করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরো বেশি হারে বিনিয়োগের আহবান জানান তিনি।

এসআই/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।