পাচারকারীদের কারণে হুমকিতে আন্দামানের জারোয়া উপজাতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২২ এএম, ০৪ আগস্ট ২০১৭

ভারতের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে বসবাসরত আদিম অধিবাসী ও উপজাতিদের রক্ষা করতে সরকার ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ করেছে আন্তর্জাতিক একটি সংগঠন। বিপন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক কচ্ছপ পাচার করতে গিয়ে এক ব্যক্তি পরপর নয়বার ওই এলাকায় ধরা পড়ার পর সংগঠনটি এ ধরনের অভিযোগ করল।

সারা দুনিয়া জুড়ে আদিবাসীদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে থাকে লন্ডন ভিত্তিক সংস্থা সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল। তারা বলছে পাচারকারীরা যেভাবে সংরক্ষিত জারোয়া উপজাতিদের এলাকায় অবাধে ঢুকে পড়ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

এর আগে স্থানীয় পত্রিকা আন্দামান ক্রনিকল-এর খবরে বলা হয়, সামুদ্রিক কচ্ছপ পাচার করতে গিয়ে গত মাসে নারায়ন রায় ওরফে সুজয় এবং সুরজিৎ দাস নামে দুই ব্যক্তি দক্ষিণ আন্দামান পুলিশের হাতে ধরা পড়ে।

তাদের কাছ থেকে ব্যাগে ভরা অবস্থায় সামুদ্রিক কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে ওই চোরাই কচ্ছপ বা সেগুলোর দেহের বিভিন্ন অংশ চড়া দামে বিক্রি হয়।

তবে নারায়ন রায়ের পাচারের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। জারোয়াদের সংরক্ষিত এলাকায় ঢুকে পড়া, বিপন্ন প্রাণী পাচার করা ও জারোয়াদের হুমকিতে ফেলার জন্য তার বিরুদ্ধে অগ্রব্রজ ও কদমতলা থানাতে আগেও অন্তত নয়টি মামলা রয়েছে।

আন্দামানের পুলিশ তাকে বর্ণনা করছে একজন স্বভাবগত চোরাশিকারি বলে। এই খবর সামনে আসার পরই দক্ষিণ আন্দামানে জারোয়াদের জন্য উদ্বেগ জানিয়েছে সারভাইভাল ইন্টারন্যাশনাল।

jaroa

ওই সংস্থার প্রধান স্টিভেন কোরি বলছেন, জারোয়াদের জন্য সংরক্ষিত অঞ্চলে চোরাশিকার একটি কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাতে জেল ও জরিমানা দুটোই বাধ্যতামূলক। তার পরেও এই ব্যক্তি কীভাবে নয়বার ধরা পড়ার পরেও প্রতিবারই ছাড়া পেয়ে গেল, সেটা বিস্ময়কর।

আন্দামানের এই জারোয়া উপজাতিদের সঙ্গে সভ্য মানুষদের সংস্পর্শ প্রায় নেই বললেই চলে। ১৯৯৮ সালে তাদের দ্বীপের কাছে বসতি স্থাপন করা কিছু মানুষের সঙ্গে শুধু তাদের সামান্য যোগাযোগ রয়েছে।

বহিরাগতদের কাছ থেকে জারোয়া'রা সহিংসতা বা যৌন হয়রানির শিকার হতে পারে কিংবা এমন রোগের সম্মুখীন হতে পারে যার বিরুদ্ধে তাদের কোনো প্রতিরোধ ব্যবস্থা জানা নেই; সেই আশঙ্কাতেই তাদের এলাকায় বাইরের কারও প্রবেশ নিষেধ।

জারোয়া রিজার্ভ বা নর্থ সেন্টিনেল আইল্যান্ডের আশেপাশে যে সমুদ্র বা জঙ্গল আছে সেখান থেকে আহরণ করা খাবার খেয়েই তারা দিন কাটায়।

ধারণা করা হয়, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে এখনও এমন কিছু উপজাতি আছে যাদের সঙ্গে সভ্য সমাজের এখনও কোনো রকম যোগাযোগই স্থাপিত হয়নি।

কিন্তু জারোয়া রিজার্ভে চোরাকারবারিরা যেরকম ঘন ঘন হানা দিচ্ছে বলে দেখা যাচ্ছে, তাতে আন্দামানের উপজাতিরা আর আদৌ সুরক্ষিত নয় বলেই অ্যাক্টিভিস্টরা মনে করছেন। বিবিসি বাংলা।

কেএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।