মেয়ের ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখে তৃপ্তির হাসি বাবার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:০১ পিএম, ০৩ আগস্ট ২০১৭

নিজের তিন বছরের মেয়ের ধর্ষককে জনসম্মুখে গুলি করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দৃশ্য দেখে সান্ত্বনা ও তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠে এক বাবার মুখে। ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলেও মেয়ে হারানোর শোক এখনও তাড়িয়ে বেড়ায় ওই বাবাকে।

গত ৩১ জুলাই ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি পাবলিক স্কয়ারে মুহাম্মদ আল-মাঘরাবি নামের এক ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তিন বছরের শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।

একে-৪৭ রাইফেল দিয়ে গুলি চালিয়ে হাজার হাজার মানুষের মাঘরাবির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইয়েমেনের সেনাবাহিনী। দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেলে ওই ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এসময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ধর্ষণের শিকার শিশুর বাবা ইয়াহিয়া আল-মাতারি।

ইয়াহিয়ার তিন বছরের মেয়ে রানা আল-মাতারিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের পর হত্যা করে আল-মাঘরাবি। পরে ইয়েমেনের শরীয়াহ আদালত এই ধর্ষককে জনসম্মুখে গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশ দেন।

মেয়ের ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর দেখার পর ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইলকে দেয়া বিশেষ এক সাক্ষাৎকারে ইয়াহিয়া আল-মাতারি বলেন, ‘আমি মনে করি; আমার পুনর্জন্ম হয়েছে। এটা আমার জীবনের প্রথম দিন। আমি এখন মুক্তি পাচ্ছি।’

rapist

মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে পুলিশের ভ্যান থেকে ধর্ষক মাঘরাবিকে যখন সানার স্কয়ারে নিয়ে আসা হয়; তখন হাজার হাজার মানুষের মুখে স্লোগান শোনা যায়। অনেকেই সেই সময় চিৎকার করে বলতে থাকেন, ন্যায়বিচার দীর্ঘস্থায়ী হোক।

মাটিতে বিছানো চাদরের ওপর শোয়ানো হয় মাঘরাবিকে। দুই হাত বাঁধা হয় পেছনের দিকে। পরে সেনাবাহিনীর এক সদস্য ওই ধর্ষকের পিঠের দুই পাশে দুই পা রেখে দাঁড়িয়ে যান। এ সময় ওই সদস্যের হাতে একে রাইফেল দেখা যায়। পরে একে-৪৭ থেকে পিঠে গুলি চালিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। পরপর পাঁচ রাউন্ড গুলি চালিয়ে শিশু হত্যাকারী ধর্ষক মাঘরাবির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

ওই শিশুর বাবা আল-মাতারি বলেন, ন্যায়বিচার, আল্লাহ ও শরীয়াহ আইনের জয় হয়েছে। ‘তাহরির স্কয়ারে আমার মেয়ে রানার ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে দেখেছি। পরে আমার পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশি ও স্থানীয় মানুষজনকে নিয়ে হাসপাতালের মর্গে যাই; যেখানে আমার মেয়ের মরদেহ রাখা ছিল।’

rapist

‘আমরা তার ছোট্ট মরদেহ নিয়ে পাশের একটি কবরস্থানে দাফন করেছি। স্ত্রী জামিলাহ ও আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ। ন্যায় বিচার এবং আল্লাহর শাসনের জয় হয়েছে।’

সানার তাহরির স্কয়ারে ওই ধর্ষককে নেয়া হলে উত্তেজিত জনতা তাকে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে এমন আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়লেও আইন লঙ্ঘন করেনি কেউ। ঈদ উৎসবের দিন রাজধানী সানায় বাড়ির সামনে খেলছিলেন শিশু রানা। পরে বাসায় নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় তিন বছরের এই শিশুকে।

তিন বছরের এই শিশুর মৃত্যুর পর পুরো দেশে শোকের ছায়া নেমে আসে। দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত একটি আদালত ওই ধর্ষককে জনসম্মুখে গুলি চালিয়ে হত্যার নির্দেশ দেয়।

আল-মাঘরাবি গ্রেফতারের পর শিশু রানাকে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে প্রাথমিক রায়ে তাকে ১০০ বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেয়া হয়। পরে দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভের মুখে আদালত ওই ধর্ষকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আদেশ দেন।

এসআইএস/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।