২০৫০ সালের মধ্যে অন্ধ মানুষ বাড়বে তিনগুণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৩ এএম, ০৩ আগস্ট ২০১৭

আগামী চার দশকের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী অন্ধ মানুষের সংখ্যা বর্তমানের চেয়ে অন্তত তিনগুণের বেশি বৃদ্ধি পাবে। সম্প্রতি ‘ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথ’র একদল গবেষক এ দাবি করেছেন।

ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথের গবেষণায় বলা হয়েছে, যদি ভালো অর্থায়নের মাধ্যমে উন্নত চিকিৎসা না করা হয়; তবে ২০৫০ সাল নাগাদ অন্ধ মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১১ কোটি ৫০ লাখে (১১৫) গিয়ে পৌঁছবে। যেখানে বর্তমান সারাবিশ্বের অন্ধ মানুষ রয়েছেন ৩ কোটি ৬০ লাখ (৩৬ মিলিয়ন)।

ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার পেছনে বয়স্ক মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে জানান দিয়ে ওই গবেষণায় দেখানো হয়েছে, বিশ্বব্যাপী অন্ধত্ব ও দৃষ্টিক্ষয় রোগের কিছু ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ হার দক্ষিণ এশিয়া ও সাব সাহারা অঞ্চলে।

ওই গবেষণায় আরও বলা হয়, বৈশ্বিক জনসংখ্যা বাড়ছে এবং আগের চেয়েও বেশি সংখ্যক মানুষ বৃদ্ধ বয়সেও ভাল আছেন। তবে গবেষকদের ধারণা, আগামী দশকগুলোতে এদের দৃষ্টিগত সমস্যা বাড়বে।

বিশ্বের ১৮৮টি দেশের ওপর চালানো গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, সারাবিশ্বে মাঝারি থেকে গুরুতর দৃষ্টিজনিত সমস্যায় ভুগছেন অন্তত ২০ কোটি মানুষ (২০০ মিলিয়ন) মানুষ। তবে ২০৫০ সাল নাগাদ এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৫৫ কোটিতে (৫৫০ মিলিয়ন)।

‘এমনকি হালকা দৃষ্টিজনিত সমস্যাও মানুষের ব্যক্তি জীবনে গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন- এটা মানুষের স্বাধীনতার মাত্রা কমবে, যখন তারা গাড়ি চালানোর মতো বিষয়েও বাধা পাবে’- বলেছেন গবেষক দলের প্রধান লেখক ও যুক্তরাজ্যের অ্যাঙ্গলিয়া রাসকিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রুপার্ট বোর্ন।

দৃষ্টিজনিত এ সমস্যা মানুষের শিক্ষাগত ও অর্থনৈতিক সুযোগও সীমাবদ্ধ করে ফেলবে বলেও মন্তব্য করেন অধ্যাপক রুপার্ট।

ওই গবেষণায় উঠে এসেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অধিবাসীরা চোখের সমস্যায় সবেচেয়ে বেশি আক্রান্ত। সেইসঙ্গে সাব সাহারা আফ্রিকার কিছু অঞ্চলেও এ রোগের হার বেড়েছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে চক্ষুরোগের চিকিৎসায় ভালো অর্থায়ন- যেমন ছানি অস্ত্রোপচারে এবং দৃষ্টি সংশোধনে সঠিক চশমার বিষয়টি নিশ্চিত করার কথাও গবেষণাও বলা হয়েছে।

এড়ানো যায় এমন অন্ধত্ব দূরীকরণে বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে কাজ করা দাতব্য প্রতিষ্ঠান ‘সাইটসেভারস’র কর্মী ইমরান খানের মতে, চোখের এসব সমস্যা পৃথিবীর দরিদ্র দেশগুলোতেই বাড়ছে।

তিনি মনে করেন, এসব দেশের ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে হবে। সেইসঙ্গে টেকসই চক্ষু স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অধিক চিকিৎসক ও নার্সদের ব্যবস্থা থাকতে হবে।

চোখের ত্রুটি ও অন্ধত্ব নিয়ে ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের মোট অন্ধত্বের শিকার মানুষের ১ কোটি ১৭ লাখ দক্ষিণ এশিয়ার অধিবাসী। এছাড়া ৬২ লাখ পূর্ব এশিয়া ও ৩৫ লাখ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অধিবাসী। এর বাইরে সাব সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের ৪ শতাংশের বেশি মানুষ এবং পশ্চিম ইউরোপের মাত্র শূন্য দশমিক ৫ শতাংশেরও কম মানুষ অন্ধত্বের শিকার।

এসআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।