ট্যাক্সির ছাদেই সবুজায়ন


প্রকাশিত: ০৩:২৬ পিএম, ২৭ মে ২০১৫

১৪ বছর ধরে কলকাতা শহরে ট্যাক্সি চালাচ্ছেন ধনঞ্জয়। নিজের চিকিৎসার প্রয়োজনে আট বছর আগে নিজের ট্যাক্সিটি বেচে দিতে বাধ্য হন তিনি। তারপর থেকে পরিচিত অমরিশ সিংহের গাড়িটিই চালাচ্ছেন তিনি। সাদামাটা ট্যাক্সিকে এ ভাবে সাজানোর ভাবনা প্রথম মাথায় আসে এক বন্ধুর কাছে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা একটা ছবি দেখে।

তিনি বলেন, “গাছপালা আমার ছোটবেলা থেকেই খুব প্রিয়। একটা সময় বহু রকমের বৃক্ষরোপন উৎসবে অংশ নিয়েছি। দেখেছি, গাছ লাগানো হয় বটে, কিন্তু যত্ন নেওয়া হয় না। ফলে গাছগুলো মরে যায়। তাই একটু অন্য রকম ভাবে সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি।``

তিনি আরো বললেন, “ট্যাক্সির ছাদে প্রথম যখন প্রায় ৬৫ কেজির ভারী ট্রে বসাই, ভয় ছিল গাড়ির ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু, এমন ভাবে আস্ত ট্রেটা বানানো হয়েছে যাতে ওজনটা সমান ভাবে ছড়িয়ে আছে। উল্টে ঘাসের আস্তরণ থাকায় গাড়ির ভিতরটাও বেশ ঠান্ডা হয়ে থাকে।’’

তিন বছর আগের কথা, এক রাতে ট্যাক্সির পিছনের আসনে একটা সুন্দর বোতল কুড়িয়ে পেয়েছিলেন তিনি। পর দিন সেটা পরিষ্কার করে সেটাতে একটা মানিপ্ল্যান্ট লাগিয়ে বোতলটা গাড়ির পিছনের আসনে বসিয়ে রাখেন তিনি। তারপর কয়েক দিনের মধ্যেই দেখা যায় ডালপালা বেরিয়ে গাছটা আরও সুন্দর হয়ে গিয়েছে। যাত্রীদেরও বেশ পছন্দ হয় বিষয়টা। তখন থেকেই গাছ লাগানোর তাগিদটা আরো বেড়ে যায়।

ধনঞ্জয় জানান, প্রথমে পাগলামি ভেবে মজা করতেন তার বন্ধুবান্ধবেরা। এমনকী সহকর্মীরাও। তবে, গাছের প্রতি এমন দুর্নিবার আকর্ষণের কাছে অবশ্য থেমে গিয়েছে সব কিছু। প্রথম প্রথম পুলিশ দেখলেই আটকাত। সন্দেহ করত যে, গাছের আড়ালে কোনও কিছু পাচার বা অন্য কিছু হচ্ছে কি না।

এখনও দাঁড় করায়, তবে সন্দেহে নয়, আগ্রহে বলে ধনঞ্জয়বাবু। সহকর্মীদের মধ্যেও বাড়ছে উৎসাহ। ধনঞ্জয় ট্যাক্সি থেকে উপার্জনের অধিকাংশটাই খরচা করেন সবুজরথের পিছনে। সহকর্মীরা যদি আগ্রহ প্রকাশ করেন, তাদের পাশেও সবটুকু সামর্থ নিয়ে দাঁড়াবেন বলেও জানালেন তিনি।

এসকেডি/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।