কাতারের নির্মাণ কাজে উ. কোরিয়ার সেনা, যুক্তরাষ্ট্র বলছে বিপজ্জনক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:১৬ এএম, ২৬ জুলাই ২০১৭

কাতারে নির্মাণ কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন উত্তর কোরিয়ার সেনারা। দেশটিতে সেনা ছাড়াও কয়েক হাজার মানুষ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকদের কাজের সুযোগ দিচ্ছে দোহা। ফলে দু’দেশের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ের এই সম্পর্ককে বিপজ্জনক হিসেবে উল্লেখ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য হিল।

দ্য হিলের এক খবরে বলা হয়েছে, কাতার একটি নিষ্ঠুর দেশকে সহায়তা দিচ্ছে। ইউনিভার্সিটি অব ভার্জিনিয়ার ছাত্র ওত্তো ওয়ার্মবিয়ারকে হত্যা করেছে উত্তর কোরিয়া। ওই ছাত্র পর্যটক হিসেবে উত্তর কোরিয়ায় গিয়েছিল। তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কোমায় চলে যায় ওই ছাত্র। কোমায় থাকা অবস্থায় তাকে দেশে ফেরত পাঠানোর এক সপ্তাহর মাথায় তার মৃত্যু হয়। অত্যাচার করার কারণেই এমন অবস্থা হয়েছে বলে ওয়ার্মবিয়ারের পরিবার অভিযোগ করে। কিন্তু উত্তর কোরিয়া তার ওপর অত্যাচারের বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

এমন বর্বর দেশের নাগরিক এবং সেনাদের শ্রমিক হিসেবে কাজ দিয়ে নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতাকে উত্তর কোরিয়া সমর্থন করছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তাছাড়া বার বার ক্ষেপণাস্ত্র এবং পারমাণবিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে উত্তর কোরিয়া। তবুও তারা তাদের কার্যক্রম থেকে সরে আসেনি।

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে কিম জং উনের দেশ। পিয়ংইয়ং যদি পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ রাখে তবেই তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হতে পারে। কিন্তু এ নিয়ে কিম জং উনের কোনো মাথাব্যথা নেই। বরং তিনি তার শত্রুদের ঠিকভাবে ঘায়েল করার জন্য একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দিচ্ছেন। শুধু তাই নয় প্রতিটি পরীক্ষা তিনি স্বচক্ষে পর্যবেক্ষণও করছেন।

QATAR

কাতারে কাজ করে উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২২ উপলক্ষে স্টেডিয়াম, হাসপাতাল, বিমানবন্দরসহ বেশ কিছু স্থাপনা তৈরির প্রকল্প নিয়েছে কাতার। কাতারে নির্মাণকাজ করছেন
উত্তর কোরিয়ার প্রায় তিন হাজার শ্রমিক।

ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২২ উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের শ্রমিকরা কাতারে কাজের জন্য যাচ্ছেন। ইতোমধ্যেই বহু দেশের শ্রমিকরা কাতারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজও করছেন। এর মধ্যে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবেই বেশি মানুষ দেশটিতে প্রবেশ করেছেন।

ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনাল উপলক্ষে কাতারের লুসাইল শহরে শ্রমিকদের কাজের সুযোগ দিয়ে উত্তর কোরিয়াকে পরোক্ষভাবে সহায়তা করছে দোহা।

উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকরা তাদের দেশের স্থানীয় নির্মাণ কোম্পানীগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এসব কোম্পানিই তাদের কাতারে কাজের সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে। সুডো কন্সট্রাকশন, গানমিয়াং কন্সট্রাকশন, ন্যামগ্যাং কন্সট্রাকশন এবং গেনকো এ ধরনেরই কয়েকটি কোম্পানি। তারা নিজেদের দেশের নির্মাণ শ্রমিকদের কাজের জন্য কাতারে পাঠাচ্ছেন।

উত্তর কোরিয়া থেকে যেসব শ্রমিকদের কাতারে পাঠানো হচ্ছে তাদের মধ্যে দেশটির সেনা সদস্যরাও রয়েছেন। পিয়ংইয়ংয়ের সেনাবাহিনীর জন্য অর্থ উপার্জন করতেই তাদের কাতারে পাঠানো হচ্ছে।

ওয়ার্ল্ড কাপ উপলক্ষে শ্রমিক নেয়ার ঘটনায় দোহা এবং পিয়ংইয়ংয়ের সম্পর্ক মজবুত হচ্ছে। তবে উত্তর কোরিয়ার যেসব শ্রমিক বিদেশে কাজ করে অর্থ উপার্জন করছেন তারা দেশে ফেরার পর পারিশ্রমিকের মাত্র ১০ ভাগ পান। আবার অনেকে তো কোনো পারিশ্রমিকই পান না। দোহায় কাজ করছেন এমন একজন নির্মাণ শ্রমিক বলেন, আমরা আমাদের দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছি।

দোহার কাফালা শ্রমিক পদ্ধতির কারণে উত্তর কোরিয়ার শ্রমিকরা তাদের দেশের কোম্পানি এবং কাতারের কাছে এক প্রকার ক্রীতদাশ হিসেবে কাজ করছেন।

টিটিএন/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।