যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে বৈরী আবহাওয়ায় নিহত ২৮
প্রলয়ঙ্করী ঝড়ের আঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ও মেক্সিকোতে অন্তত ২৮ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। এদিকে মঙ্গলবার প্রবল বর্ষণের কারণে টেক্সাসের মধ্যাঞ্চল প্লাবিত হয়ে গেছে। আরো ভয়াবহ বন্যা দেখা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছেন হিউস্টনের মেয়র।
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য টেক্সাস ও ওকলাহোমা এবং মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলে বিগত কয়েক দিন ধরে টর্নেডোসহ বৈরী আবহাওয়া চলছে। দেশ দুটিতে বেশ কয়েকজন নিখোঁজ ও আহত হয়েছে।
টেক্সাসের হিউস্টন নগরীতে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ১০ ইঞ্চির বেশি (২৫ সেন্টিমিটার) বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিগত ১০ বছরের মধ্যে এটাই এই অঞ্চলের সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের ঘটনা।
হিউস্টনের রাস্তাগুলোতে কয়েকশ গাড়ি পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এগুলোর কোনো কোনোটি সম্পূর্ণভাবে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
বহু মানুষ তাদের গাড়িতে আটকা পড়েছে। অনেকের বাড়ির চারপাশে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় তারাও আটকা পড়েছে। মেয়র অ্যানিস পারকার জানান, গত রাতে বন্যার পানিতে ডুবে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘আমি মানুষকে নিরাপদে থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি। বুধবার রাতে আরো বৃষ্টিপাত হতে পারে বলে তাদের সাবধান করে দিচ্ছি।’ যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ বৃহত্তম নগরীর বাসিন্দাদের বাড়িতে থাকার জন্য আহ্বান জানান মেয়র।
তিনি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘নগরীর বিভিন্ন স্থানে গাড়ি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।’ জরুরি কর্মীরা এই সব পরিত্যক্ত যানবাহনগুলোতে কেউ আটকা পড়ে আছে কিনা তা দেখতে সেগুলোর কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। চলতি সপ্তাহে স্থানীয় বাসিন্দারা আবারও প্রাণনাশকারী বৈরী আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন।
এই নারী মেয়র বলেন, ‘যদি আপনি নিচু এলাকার বাসিন্দা হন, তবে সপ্তাহান্তে আবারো আকস্মিক বন্যার ব্যাপারে আপনাদের সতর্ক করছি। আপনারা উঁচু এলাকায় আশ্রয় নিন। এটা জীবন-মরণের প্রশ্ন।’
স্টেডিয়ামে পানি উঠে গেলে একটি এনবিএ ম্যাচ দেখতে আসা প্রায় ২০০ দর্শক কয়েক ঘণ্টা আটকা পড়ে। এদের অনেকে টয়োটা সেন্টার অ্যারিনায় রাত কাটাতে বাধ্য হয়।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা টেক্সাসের এই বন্যাকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যায়িত করে জানিয়েছেন, তিনি রাজ্য গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোটকে জরুরি সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।
টেক্সাসের উত্তরে ওকলাহোমায় আরো দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। হেইস কাউন্টিতে সপ্তাহান্তে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় একটি বাড়ি ধসে পড়লে বেশ কয়েকজন নিখোঁজ হয়।
সোমবার সিউদাদ অকুনায় ছয় সেকেন্ড স্থায়ী ভয়াবহ টর্নেডোর আঘাতে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কয়েকশ বাড়িঘর মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।
টর্নেডো ঘণ্টায় ২৭০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার (১৬৮ মাইল থেকে ১৮৬ মাইল) বেগে বয়ে যায়। এ সময় বাবা-মার কাছ থেকে একটি শিশুকে ঝড়ো হওয়া উড়িয়ে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার শিশুটির মৃতদেহ পাওয়া যায়। টর্নেডোর আঘাতে ২৪৭টি বাড়ি ধ্বংস হয়েছে এবং আরো ৪৫০টি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেডারেল সরকার।
একে/আরআই