ধূমপানের বিরতি পায় যে স্কুলের শিক্ষার্থীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:৪৯ এএম, ২৪ জুলাই ২০১৭

অস্ট্রেলিয়ার একটি স্কুলে ১৫ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীরা ধূমপানের জন্য বিরতি পায়। সকালের নাশতা, দুপুরের খাবারের বিরতির মত ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের ধূমপানের জন্য দেয়া হয় বিরতি। 

সিডনির দ্য ওয়ারাকিরি কলেজের অধ্যক্ষ ক্যারোলিন ব্ল্যান্ডেনের বিশ্বাস, শিক্ষার্থীবান্ধব নিয়ম তাদের স্কুলে আসতে উৎসাহিত করবে।

অস্ট্রেলিয়ান দৈনিক ডেইলি টেলিগ্রাফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আপনি চাইলেই আমাদের স্কুলে উজ্জল রংয়ের নীল চুল কিংবা মুখে কোনো ধাতুর তৈরি জিনিস লাগিয়ে আসতে পারবেন। আপনার যদি ধূমপানের প্রয়োজন হয়, সেটাও করতে পারবেন; কোনো সমস্যা নেই।’

স্কুলের এক শিক্ষার্থী জানায়, শুধু ধূমপান নিষিদ্ধের কারণে এর আগে একাধিকবার স্কুলে আসা থেকে বিরত থেকেছে সে। 

নিজের পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে ক্যারোলিন বলেন, ‘স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের ধূমপানের অনুমতি দিয়েছি। রাস্তায় ঘুরে ঘুরে লুকোচুরি করে সিগারেট খাওয়া কিংবা তাদের আটকে রাখার চেয়ে বিষয়টা অনেক ভাল।’

এর আগে ব্যয়বহুল বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা আছে প্রিন্সিপাল ক্যারোলিনের। কিন্তু বর্তমানে করা কাজটা এ যাবৎ কালের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানের বলে মনে করেন তিনি। 

‘এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পরিবার নেই, অনেকেরই মা-বাবা কারাগারে রয়েছেন, কারও পরিবার মাদকাসক্ত। দুই বছরে ছয়টি বিষয়ে পড়াশোনার চেয়ে এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর তিনটি বিষয়ে পড়াশোনা করে।’ 

‘এখানে স্কুল যেমন আছে, আছে কলেজও; তবে সেখানে নেই কোনো মাসিক ফি বা ইউনিফর্ম। শারীরিক ব্যায়ামের জন্য জিমনেসিয়ামের পাশাপাশি ক্লাস না থাকলে সেখানে অবস্থানের সুবিধা রয়েছে।’

দশ বছর শিক্ষা জীবন পার করেই এখানে অনেকেই গ্র্যাজুয়েট হয়ে যান। অর্থাৎ সেসময় তাদের বয়স হয় মাত্র ১৪ থেকে ১৬ বছর। অবশ্য ১৫ থেকে ২২ বছর বয়সী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। সেকারণে বলা চলে ধূমপান করা এসব শিক্ষার্থী মোটামুটি গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পথেই থাকেন। 

ওয়ারাকিরি কলেজের অস্ট্রেলিয়ায় দাতব্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে রেজিস্ট্রেশন করা আছে। এজন্য অনেকেই ওই প্রতিষ্ঠানে অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকে। ফলে শিক্ষার্থদের কোনো খরচ লাগে না।

আবার এই স্কুলে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের অনেকেই অন্য প্রতিষ্ঠানে ঝরে পড়ার তালিকায় ছিলেন। ১৫ বছর বয়সী নাথান কলিন্স বলেন, ‘আগের স্কুলে পড়ার সময় মনে হত প্রতিদিন ধর্ষিত হচ্ছি। সেকারণে পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন আর সেরকম কিছু মনে হয়। এজন্য ওয়ারাকিরিকে ধন্যবাদ।’

সূত্র : ইয়াহু নিউজ।

কেএ/এসআইএস/এমএস

এখানকার বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর পরিবার নেই, অনেকেরই মা-বাবা কারাগারে রয়েছেন, কারও পরিবার মাদকাসক্ত। দুই বছরে ছয়টি বিষয়ে পড়াশোনার চেয়ে এখানকার শিক্ষার্থীরা প্রতি বছর তিনটি বিষয়ে পড়াশোনা করে

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।