আরও দুই ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:০২ এএম, ২৩ জুলাই ২০১৭

পবিত্র ভূমি জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ নিয়ে চলমান সংকটে অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে পৃথক সংঘর্ষে আরও দুই ফিলিস্তিনি তরুণ নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। খবর আল জাজিরার। 

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, শনিবার পূর্ব জেরুজালেমের আল-আইজেরিয়া শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো গুলিতে গুরুতর আহত হন ১৭ বছর বয়সী ওডে নওয়াজা। রোববার চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রাণ হারান তিনি।

অধিকৃত পশ্চিম তীরের আবু ডিস গ্রামে ইসরায়েলি বাহিনীকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের পরিকল্পনার সময় ১৮ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি আরেক তরুণকে গুলি করে হত্যা করা হয়। 

জেরুজালেমে মোতায়েন করা ইসরায়েলি পুলিশ বলছে, পাথর ও বোতল নিক্ষেপকারী কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিকে তারা কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন। 

কিন্তু ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ভিড়ের মধ্যে জলকামান ব্যবহার করছে ইসরায়েলি বাহিনী। গত শনিবারই অধিকৃত পশ্চিম তীরে অতিরিক্ত সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে ইসরায়েল। শুক্রবার তিনজন ইসরায়েলিকে ছুরিকাঘাতে হত্যাকারী ফিলিস্তিনির পশ্চিম তীরের গ্রামে কোবারের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। 

এ সময় হামলাকারীর এক ভাইকে আটকের পর তাদের বাড়িঘর ভাংচুর করে ইসরায়েলি বাহিনী। 

যত দ্রুত সম্ভব আল আকসা মসজিদ নিয়ে চলমান সংকট নিরসনে আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে সুইডেন, মিসর ও ফ্রান্স। সহিংসতা বন্ধে সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে। 

পবিত্র ভূমি জেরুজালেমের আল আকসা মসজিদের প্রবেশপথে বিতর্কিত মেটাল ডিটেক্টর বসানোর বিকল্প বিবেচনা করার কথাও জানিয়েছে ইসরায়েল। মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে অন্য কী পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শের জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মেজর জেনারেল ইয়ভ মোরদেশাই। 

মেটাল ডিটেক্টরের ব্যাপারে জেনারেল মোরদেশাই বিবিসি অ্যারাবিককে জানান, আমাদের প্রত্যাশা জর্ডান এবং আরব বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশ চলমান সংকটের ব্যাপারে ভিন্ন কোনো নিরাপত্তা সমাধান সুপারিশ করবে। 

তিনি আরও বলেন, ইলেক্ট্রনিক, সাইবার কিংবা আধুনিক প্রযুক্তির যে কোনো নিরাপত্তা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সমাধানে আসতে চায় ইসরায়েল। আমরা নিরাপত্তা সমাধান চাই, রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় সমাধান নয়।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যালান জনস্টন বলেন, চলমান সংকট নিয়ে ইসরায়েলের অবস্থান থেকে নমনীয়তার প্রথম চিহ্ন এটি।

চলতি মাসের শুরুর দিকে আল আকসা মসজিদ এলাকায় ইসরায়েলের দু’জন পুলিশ নিহতের জেরে মেটাল ডিটেক্টর বসানো হয়।

এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ফিলিস্তিনিরা। পবিত্র ভূমি জেরুজালেম ইসরায়েল একা নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়ারও অভিযোগ করেন তারা। এ নিয়ে বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ফিলিস্তিনি নাগরিকের ছুরিকাঘাতে একই পরিবারের তিনজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। 

টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে আরোপিত পদক্ষেপ বাতিল না করা পর্যন্ত আমি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক স্থগিতের ঘোষণা দিচ্ছি।’

ফিলিস্তিনিদের দাবি, শুক্রবার তাদের ১০ নেতাকে আটক করে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আটককৃতদের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ পার্টির জেরুজালেম নেতা হাতেম আবদেল কাদেরও রয়েছেন বলে দাবি ফিলিস্তিন প্রিজনার্স ক্লাবের।  

কেএ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।