আল-আকসায় মেটাল ডিটেক্টর : বিকল্প চায় ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:২৫ এএম, ২৩ জুলাই ২০১৭

পবিত্র ভূমি জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের প্রবেশপথে বিতর্কিত মেটাল ডিটেক্টর বসানোর বিকল্প বিবেচনা করার কথা জানিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর বিবিসির। 

মেটাল ডিটেক্টর সরিয়ে নিয়ে অন্য কী পদ্ধতি ব্যবহার করা যায়, সে ব্যাপারে পরামর্শের জন্য মুসলিম বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মেজর জেনারেল ইয়ভ মোরদেশাই। 

মেটাল ডিটেক্টরের ব্যাপারে জেনারেল মোরদেশাই বিবিসি অ্যারাবিককে জানান, আমাদের প্রত্যাশা জর্দান এবং আরব বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশ চলমান সংকটের ব্যাপারে ভিন্ন কোনো নিরাপত্তা সমাধান সুপারিশ করবে। 

তিনি আরও বলেন, ইলেক্ট্রনিক, সাইবার কিংবা আধুনিক প্রযুক্তির যে কোনো নিরাপত্তা হতে পারে। বিষয়টি নিয়ে সমাধানে আসতে চায় ইসরায়েল। আমরা নিরাপত্তা সমাধান চাই, রাজনৈতিক কিংবা ধর্মীয় সমাধান নয়।

বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্পাদক অ্যালান জনস্টন বলেন, চলমান সংকট নিয়ে ইসরায়েলের অবস্থান থেকে নমনীয়তার প্রথম চিহ্ন এটি।

চলতি মাসের শুরুর দিকে আল আকসা মসজিদ এলাকায় ইসরায়েলের দু’জন পুলিশ নিহতের জেরে মেটাল ডিটেক্টর বসানো হয়।

এ ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ফিলিস্তিনিরা। পবিত্র ভূমি জেরুজালেম ইসরায়েল একা নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়ারও অভিযোগ করেন তারা। এ নিয়ে বিক্ষোভে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে এখন পর্যন্ত সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ফিলিস্তিনি নাগরিকের ছুরিকাঘাতে একই পরিবারের তিনজন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। 

তিনজন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার জেরে দু’জন ইসরায়েলি পুলিশ খুন হওয়ার পর ৫০ বছরের কম বয়সীদের আল আকসা মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এরপর রাস্তায় মেটাল ডিটেক্টর বসিয়ে রাখে ইসরায়েলি বাহিনী। এ ছাড়া প্রায় তিন হাজার পুলিশ ও সীমান্ত রক্ষী মোতায়েন করা হয়। 

প্রতিবাদে ফুঁসে ওঠা ফিলিস্তিনিরা গত শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের জন্য আল আকসা মসজিদের দিকে যেতে চাইলে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বাধা দেয়। ইসরায়েলি বাহিনীর বাধার মুখে রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন বিক্ষুব্ধ ফিলিস্তিনিরা। পরে মুসল্লিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত ও একশ ৪০ জন আহত হন। 

এর কয়েক ঘণ্টা পরে ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতিতে ছুরিকাঘাতে তিন ইসরায়েলি নিহত হন।

গত শনিবার আহত দুই তরুণের সোমবার মারা যাওয়ার সংবাদ জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। 

টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ‘আল-আকসা মসজিদে প্রবেশে আরোপিত পদক্ষেপ বাতিল না করা পর্যন্ত আমি ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক স্থগিতের ঘোষণা দিচ্ছি।’

ফিলিস্তিনিদের দাবি, শুক্রবার তাদের ১০ নেতাকে আটক করে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আটককৃতদের মধ্যে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ফাতাহ পার্টির জেরুজালেম নেতা হাতেম আবদেল কাদেরও রয়েছেন বলে দাবি ফিলিস্তিন প্রিজনার্স ক্লাবের। 

সহিংসতা বন্ধে সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সম্ভাব্য উপায়গুলো নিয়ে আলোচনা করবে। 

কেএ/এনএফ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।