ভারত ধৈর্যের বাধ ছাড়িয়ে যাচ্ছে : বিদেশি কূটনীতিকদের জানাল চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:১২ এএম, ১৮ জুলাই ২০১৭

প্রায় এক মাস ধরে সিক্কিমে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারত-চীনের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সীমান্ত বিরোধ নিয়ে ভারতের সঙ্গে ধৈর্যের বাধ ভেঙে যাচ্ছে বলে গত সপ্তাহে বেইজিংয়ে বিদেশি কূটনীতিকদের জানিয়ে দিয়েছে চীন। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদেশি কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চীনের ওই হুশিয়ারির পর কূটনীতিকদের অনুরোধে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসগুলোকে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে অবস্থান জানিয়ে দিয়েছে ভারত। 

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় বিদেশি কূটনীতিকদের জানায়, উত্তেজনা কমিয়ে আনতে কূটনৈতিক যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। 

এদিকে ভারত সরকার সিক্কিম পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের শঙ্কার কারণ নেই বলে কূটনৈতিকদের জানালেও সূত্র বলছে, সিক্কিমের পরিস্থিতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উদ্বেগের কারণ হয়েছে। 

চীনের অভিযোগ, সিক্কিম সীমান্তে ‘অবৈধ সীমালঙ্ঘন’ করছে ভারত। দোকলাম অঞ্চলে বেইজিংয়ের একটি সড়ক নির্মাণ কাজে ভারত দেয়ার পর ওই অভিযোগ করেছে চীন। চীন যে এলাকায় সড়ক নির্মাণ করতে চাচ্ছে সেই এলাকাটিকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি ভুটানের; এতে সমর্থন রয়েছে ভারতেরও। 

সাম্প্রতিক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর চীনকে দোকলামে সড়ক নির্মাণ থেকে বিরত থাকতে সতর্ক করে দেয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে ভারত। ভারত দোকলামের ওই এলাকাকে নিরাপত্তার জন্য গুরুতর বিষয় বলে জানিয়ে দেয়। কারণ সড়ক নির্মাণ করা হলে সীমান্তের ২৩ কিলোমিটার প্রশস্ত দুর্গম এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা খুব সহজ হবে চীনা সেনাবাহিনীর জন্য। ওই দুর্গম এলাকার সঙ্গে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্তত সাতটি রাজ্যের সংযোগ আছে।   

এর আগে গত জুনের শুরুতে চীনের ওই সড়ক নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। এরপর এই সড়ক নির্মাণ কাজে বাধা দেয়ার জন্য ভারতে কড়া মাশুল গুণতে হবে বলে হুঁশিয়ারি এসেছে চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ও সরকারি মুখপাত্রদের কাছে থেকে। 

উত্তেজনা এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে চীনের রাষ্ট্রীয় দৈনিক গ্লোবাল টাইমস অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। বেইজিংয়ের এই দৈনিক চলতি মাসে এক প্রতিবেদনে বলছে, ১৯৬২ সালে চীনা ভূখণ্ডে অতর্কিত ভারতীয় হামলার কারণে চীন-ভারত যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। এতে অন্তত ৭২২ চীনা সৈন্য ও ৪ হাজার ৩৮৩ ভারতীয় সৈন্যের প্রাণহানি ঘটে। 

ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মির থেকে অরুণাচল প্রদেশ পর্যন্ত চীন-ভারতের দীর্ঘ ৩ হাজার ৪৮৮ কিলোমিটার সীমান্ত আছে। এর মধ্যে সিকিমেই রয়েছে প্রায় ২২০ কিলোমিটার। বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে গ্লোবাল টাইমস বলছে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধের বিনিময়ে হলেও চীন তার সীমান্তের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে।

সম্প্রতি ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ১৯৬২ সালে ভারত যা ছিল; ২০১৭ সালের ভারত তার চেয়ে ভিন্ন। ভারতীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় চীনের সাংহাই মিউনিসিপ্যাল সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অধ্যাপক ওয়াং দেহুয়া বলেন, ১৯৬২ সালের চীনও এখন ভিন্ন।

এসআইএস/আরআইপি

“চীনের অভিযোগ, সিক্কিম সীমান্তে ‘অবৈধ সীমালঙ্ঘন’ করছে ভারত। দোকলাম অঞ্চলে বেইজিংয়ের একটি সড়ক নির্মাণ কাজে ভারত দেয়ার পর ওই অভিযোগ করেছে”

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।