যে কারণে ফেঁসে যেতে পারেন নওয়াজ শরীফ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪৭ এএম, ১৫ জুলাই ২০১৭

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সর্বশেষ কেলেঙ্কারির নাম দেয়া হয়েছে ‘ফন্টগেট’। বিতর্কের কেন্দ্রে আছে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড প্রোগ্রামের একটি টাইপ ফন্ট ‘ক্যালিব্রি’। এই ফন্টটি কখন সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছিল, তার ওপর নির্ভর করছে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে একটি দুর্নীতির অভিযোগের ভবিষ্যৎ।

এই ‘ফন্টগেট’ নিয়ে এখন পাকিস্তানের সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-কৌতুক-বিতর্ক চলছে। 

গত বছর ‘পানামা পেপারস’ ফাঁস হওয়ার পর জানা যায়, পাকিস্তানের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিক, যার মধ্যে নওয়াজ শরিফও আছেন।

পাকিস্তানের বিরোধী রাজনীতিকরা অভিযোগ করছেন, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচার করে সেই অর্থে লন্ডনে দামী ফ্ল্যাট কেনা হয়েছিল। একদল তদন্তকারী এখন এই দুর্নীতির ঘটনা তদন্ত করছে। এই অভিযোগ প্রমাণিত হলে নওয়াজ শরিফ প্রধানমন্ত্রীর পদের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হতে পারেন।

এই তদন্তে খোঁজা হচ্ছে সেন্ট্রাল লন্ডনে দামী ফ্ল্যাটগুলো যে কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে কেনা হয়েছে, সেগুলোর মালিক কারা? পানামা পেপারসে  ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ সেগুলোর মালিক। মরিয়ম নওয়াজই তার পিতার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারি হিসেবে দলের হাল ধরবেন বলে মনে করা হয়।

তবে মরিয়ম নওয়াজ দাবি করছেন, তিনি কোম্পানিটির ট্রাস্টি মাত্র। এর সপক্ষে তিনি প্রমাণ হিসেবে যে দলিল পেশ করেছেন, সেটি সই করা হয়েছে ২০০৬ সালে।

কিন্তু তদন্তকারীরা বলছেন, মাইক্রোসফটের যে ফন্ট ব্যবহার করে দলিলটি টাইপ করা হয়েছে, সেই ক্যালিব্রি ফন্টটি ২০০৬ সালে সাধারণের ব্যবহারের কোনো সুযোগই ছিল না। এটি উন্মুক্ত করা হয় ২০০৭ সালে।

সুতরাং তদন্তকারীরা বলছেন, এই দলিলটি আসলে জাল। তারা মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ করছেন।

মরিয়ম নওয়াজ অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। কিন্তু তাই বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থেমে নেই। 

টাইপোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ থমাস ফিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন, যদিও ক্যালিব্রি ফন্টের বেটা ভার্সন ২০০৪ সাল থেকে পাওয়া সম্ভব ছিল, কিন্তু এটি সাধারণ ব্যবহারকারীদের ব্যবহারের ডাউনলোডের ঘটনা হবে খুবই বিরল এক ঘটনা। ফন্টটি যিনি তৈরি করেছেন, সেই লুকাস ডে গ্রুটও একই মন্তব্য করেছেন।

কিন্তু এরই মধ্যে উইকিপিডিয়ায় এই ক্যালিব্রি ফন্টের ইতিহাস নিয়ে শুরু হয়ে গেছে রহস্যময় সব ঘটনা।

পাকিস্তানে এই দুর্নীতির মামলায় ক্যালিব্রি ফন্টের বিতর্ক শুরু হওয়ার পর দেখা গেল উইকিপিডিয়ায় ক্যালিব্রি ফন্টের ইতিহাস বার বার এডিট করা হচ্ছে।

বাধ্য হয়ে উইকিপিডিয়ার কর্তৃপক্ষ ক্যালিব্রি ফন্টের পাতাটির সম্পাদনার সুযোগ আপাতত বন্ধ করে দিয়েছেন।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, তার ভাইরা এবং মেয়ে মরিয়ম নওয়াজ তাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।

কিন্তু সামনের সপ্তাহে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের তিনজন বিচারক মিলে তদন্তকারীদের রিপোর্টের ভিত্তিতে এই মামলার ব্যাপারে তাদের রায় দেবেন।

কেএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।