খোলা আকাশের নিচেই প্রকৃতির ডাক সারেন তারা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৯ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৭

বাড়ির অাশেপাশেই খোলা জায়গায় চট দিয়ে ঘিরে গোসল করেন পরিবারের নারী সদস্যরা। সেই চটের অবস্থাও জরাজীর্ণ। তবে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার জন্য সকলকেই ছুটতে হয় খোলা মাঠে, রেল লাইনের ধারে অথবা ঝোপের আড়ালে। 

ফলে দুর্গন্ধে টিকে থাকাটাই দায় হয়ে পড়েছে ভারতের রেলশহর খড়গপুরের বাসিন্দাদের। 

কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য জানানো হচ্ছে ঘরে-ঘরে টয়লেট নিশ্চিত করা। সে অনুযায়ী চলছে স্বচ্ছ ভারত অভিযান। অথচ খড়গপুরের বেশিরভাগ স্থানে হাঁটা চলাফেরা করলেই যেখানে সেখানে মানুষজনকে খোলা জায়গায় প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে দেখা যাবে। 

চলতি বছরের এপ্রিলে রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোহেন শহরটিতে গিয়ে বলেছিলেন, সেখানকার বস্তি এলাকায় ন্যূনতম নাগরিক পরিসেবায় বাধা থাকবে না। অথচ রেলের জমিতে থাকা বস্তি এলাকায় টয়লেটের অভাবে মানুষের একমাত্র ভরসা খোলা মাঠ। 

শহরের বিভিন্ন রেলবস্তিতে বাড়ি-বাড়ি টয়লেট তো দূরের কথা; গণ শৌচাগারও নেই। দু-একটা থাকলেও তা ব্যবহারের অযোগ্য। বিপজ্জনকও বটে।

শহরের রামনগরে প্রায় দেড় শতাধিক পরিবারের বাস। সেখানকার কোনো বাড়িতেই টয়লেট নেই। গত নির্বাচনের আগে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনেছিলেন কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপির সম্পাদক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন সেসময়। পরে রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু খড়গপুরে এসে শহরের বস্তি এলাকার উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রতিশ্রুতি ছিল তৃণমূলেরও। 

এরপর বিধানসভারও নির্বাচন পেরিয়ে গেছে। এখন শহরের বিধায়ক বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পুরপ্রধান তৃণমূলের শহর সভাপতি প্রদীপ সরকার। কিন্তু রামনগর রেলবস্তির অনুন্নয়নের ছবিটা বদলায়নি। 

স্থানীয় বাসিন্দা শান্তিদেবী সিংহ, শচীনাদেবী সিংহ, অরুণাদেবী জানান, কোথায় উন্নয়ন! এখনও নারীদের সম্মান বিসর্জন দিয়ে টয়লেট সারার জন্য রেল লাইনের ধারে যেতে হয়। বর্ষায় ভোগান্তির শেষ থাকে না।

তাদের অভিযোগ, টেলিভিশনে, খবরের কাগজে প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি-বাড়ি শৌচালয়ের কথা লেখা হচ্ছে। কিন্তু ভোটের পরে কেউ তাদের দিকে ফিরেও তাকাল না।

অন্যান্য রেলবস্তির অবস্থাও একই। বাড়ি-বাড়ি শৌচাগার নেই। বাড়ির সামনে ছেঁড়া বেড়ার মধ্যে গোসল সারলেও শৌচকর্মের জন্য যেতে হয় খোলা মাঠে। সরকারের করে দেয়া শৌচাগারে কাদা-জঙ্গল পেরিয়ে যাওয়া যেমন বিপজ্জনক তেমনই নোংরা অার দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।

রেলের স্বাস্থ্য বিভাগের সুপারিন্টেন্ডেন্ট এ মণ্ডল বলেন, রেলের এলাকায় জবরদখল আইন বিরুদ্ধ। তাই সেখানে শৌচাগার গড়া মানে দখলদারিকে প্রশ্রয় দেয়া। সেকারণে ওই এলাকাতে আমরা কোনো শৌচাগার নির্মাণ করিনি। আনন্দবাজার।

কেএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।