নিয়মিত সম্মেলন করতে না পারলে গঠনতন্ত্র ছিঁড়ে ফেলুন


প্রকাশিত: ০১:০১ পিএম, ১৯ মে ২০১৫

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, এভাবে ১২ বছর পর সম্মেলন করে সংগঠন চলতে পারে না। তিন বছর পর পর ওয়ার্ড থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়মিত সম্মেলন অনুষ্ঠান করতে হবে। তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিয়মিত দলের সম্মেলন করতে না পারলে গঠনতন্ত্র ছিড়ে ফেলুন।

তিনি আরো বলেন, আমরা যদি গত ১২ বছরে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সম্মেলন তিনবার করতে পারি তবে আপনারা কেন পারবেন না। তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের গঠনতন্ত্রের বাধ্যবাধকতা উপলব্ধি করতে হবে। আওয়ামী লীগের শক্তি দুইটা, একটি বাংলার জনগণ আরেকটি আওয়ামী লীগের সংগঠন। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।

এলজিআরডি মন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা আওয়ামী লীগের শক্তি নয়। মূল শক্তি দেশের জনগণ এবং আওয়ামী লীগের সংগঠন। এর কোনো একটা যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে আওয়ামী লীগে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে। আগামী নির্বাচন একটি পৃথক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। সে নির্বাচনে জয়লাভ করতে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। তা না হলে দলে বিপর্যয় নেমে আসবে, সরকারও গঠন করা হবে না।

তিনি বলেন, সংগঠন শক্তিশালী করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। তৃণমূল সংগঠন নিয়মিত না থাকায় গত উপজেলা নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হয়েছিল। শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

প্রায় একযুগ পর ১৯ মে মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় শহীদ দারোগ আলী পৌর পার্ক মাঠে শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এসময় মতিয়া চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। যড়যন্ত্রকারীরা থেমে নেই। তারপরও আওয়ামী লীগ জাতির জনকের হত্যার বিচার, যুদ্ধপরাধিদের বিচার করে রায় কার্যকর করেছে। দেশ বিদেশের নানা চক্রান্ত সত্বেও পদ্মা সেতুর কাজ হচ্ছে।

সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া সালাহ উদ্দিনকে লুকিয়ে রেখে নাটক সাজিয়ে শেখ হাসিনা সরকারকে বিপদে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাদের সব গোমর ফাঁস হয়ে গেছে। খালেদার প্রতি ঘৃণা, ঘৃণা, ঘৃণা বারবার ঘৃণা। বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে দেশে সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ কায়েম করতে চায়। তারা পেট্রলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করে ক্ষমতায় যেতে চান। তাদেরকে প্রতিহত করতে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, পাট ও বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী মীর্জা আজম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন মেহেদী, সংরক্ষিত মহিলা এমপি ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলি প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল।

এদিকে, সকাল থেকেই শেরপুর সদর ও অন্যান্য উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মিছিল নিয়ে সম্মেলনস্থলে হাজির হন। নেতাকর্মীদের পদভারে সম্মেলনস্থল মুখরিত হয়ে ওঠে। সম্মেলনের শেষে বিকেলে একই মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি পদে পুনরায় হুইপ আতিউর রহমান আতিক ও সাধারণ সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল নির্বাচিত হন। ৭১ সদস্য বিশিষ্ট শেরপুর জেলা কমিটির অন্যান্য পদে পরবর্তীতে নেতা নির্বাচন করা হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩ সালের ২৩ অক্টোবর সর্বশেষ শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছিল।

হাকিম বাবুল/এমজেড/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।