মুহাম্মদ ইউনূসের আরেকটি অর্জন


প্রকাশিত: ০৩:৫১ পিএম, ২৮ জুন ২০১৭

বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঝুড়িতে আরেকটি সম্মাননা যোগ হল। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা কংগ্রেশনাল স্বর্ণপদক গ্রহণ করেছেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা। তবে নিজের দেশে বর্তমানে বেশ চাপের মধ্যে আছেন তিনি।

সম্মাননা গ্রহণ

Yunus

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উভয় কক্ষের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটল ভবনের রোটান্ডায় অধ্যাপক ইউনূসের হাতে সম্মাননা তুলে দেন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার জন বোয়েনার। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট নেতা ন্যান্সি পেলোসি।

বাংলাদেশের মানুষকে উৎসর্গ

Yunus

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা কংগ্রেশনাল গ্রহণ করার পর অধ্যাপক ইউনূস বলেন, সকলে আমার কাজে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন বলেই ক্ষুদ্রঋণের ধারণাটি আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। আমি এ সম্মান বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্যে উৎসর্গ করলাম।

প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক

Yunus

এর আগে ২০০৯ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি মর্যাদাশীল সম্মাননা অর্জন করেন ইউনূস। ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক পান ড. ইউনূস। সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী এই সম্মাননা দেয়া হয়।

অন্য উচ্চতায় ইউনূস

Yunus

ইউনূস হচ্ছেন প্রথম এবং একমাত্র বাংলাদেশি, যিনি নোবেল পুরস্কার জয়ের পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দুটি মর্যাদাশীল সম্মাননা অর্জন করেছেন। গোটা বিশ্বে মাত্র সাতজন জীবদ্দশায় এই তিনটি সম্মাননা পেয়েছেন। এরা হচ্ছেন নরম্যান বারলগ, মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র, নেলসন ম্যান্ডেলা, এলি উইসেল, অং সান সু চি, মাদার তেরেসা এবং সর্বশেষ মুহাম্মদ ইউনূস।

গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা

Yunus

গরিব মানুষ বিশেষ করে নারীদের ক্ষুদ্রঋণ দেয়ার জন্য ১৯৭৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন মুহাম্মদ ইউনূস। আধুনিক ক্ষুদ্রঋণের জনক বলা হয় তাকে। গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ক্ষুদ্রঋণকে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন তিনি। ক্ষুদ্রঋণের এই ধারণা অধ্যাপক ইউনূসকে গোটা বিশ্বেই সম্মানজনক পরিচিতি এনে দিয়েছে।

শান্তিতে নোবেল জয়

Yunus

২০০৬ সালের যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয় করেন অধ্যাপক ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংক। সে বছরের ডিসেম্বরে নরওয়ের রাজধানী অসলো’র টাউন হলে এই সম্মাননা গ্রহণ করেন অধ্যাপক ইউনূস এবং গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিনিধি তসলিমা বেগম।

রাজনীতির ইচ্ছা এবং বিড়ম্বনা

Yunus

শান্তিতে নোবেল জয়ের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রবেশের ঘোষণা দেন অধ্যাপক ইউনূস। তবে এই সিদ্ধান্ত থেকে দ্রুতই সরে আসেন তিনি। কিন্তু অনেকেই মনে করেন, রাজনীতিতে নামার এই বাসনার কারণে পরবর্তীতে অনেক রাজনীতিবিদের চক্ষুঃশূল হন তিনি।

গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বিদায়

Yunus

শান্তিতে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূস সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশে বেশ খানিকটা চাপের মধ্যে রয়েছেন। বয়সসীমা অতিক্রান্ত হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ইউনূসকে অব্যাহতি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়েছেন ইউনূস।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ?

Yunus

যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনও অধ্যাপক ইউনূসকে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে স্বীকার করেননি। তবে এ কথা বহুদিন ধরে চালু যে, অধ্যাপক ইউনূসের ওপর কোনো কারণে নাখোশ তিনি। যেকারণে চলতি সরকারের মেয়াদে নিজ দেশের বিভিন্ন ইস্যুতে চাপে আছেন মুহাম্মদ ইউনূস। ডিডব্লিউ।

কেএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।