সেলফোন বিক্রির পরিমাণ কমেছে ভারতে


প্রকাশিত: ১১:১৬ এএম, ১৯ মে ২০১৫

দীর্ঘদিন ধরে ভারতের বাজারে সেলফোনে বিক্রিতে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি বিরাজ করলেও ২০ বছরের মধ্যে এই প্রথম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বিক্রির পরিমাণ কমেছে ভারতের সেলফোনের বাজারে। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাইবার মিডিয়া রিসার্চে বলা হয়েছে, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) সেলফোন বিক্রি গত বছরের শেষ প্রান্তিকের তুলনায় কমেছে প্রায় ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ। খবর বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।

সাইবার মিডিয়ার তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সালের শেষ প্রান্তিকে ভারতীয়রা ৬ কোটি ২০ লাখ ইউনিট সেলফোন কিনেছেন। এর ঠিক পরের প্রান্তিকেই বিক্রি কমে দাঁড়িয়েছে ৫ কোটি ৩০ লাখে। এ সময় স্মার্টফোনের বিক্রি কমে ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং তুলনামূলক কম দামি ফিচার ফোনের বিক্রি কমেছে ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ।

আরেক বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইমার্কেটারের সমীক্ষায় জানা যায়, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ২০১৪ সালে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল স্মার্টফোন বাজারের খেতাব পায় ভারত। ধারণা করা হচ্ছে, দেশটি যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে ২০১৬ সালের মধ্যে স্মার্টফোনের বাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে আসবে। তবে গত প্রান্তিকে বিক্রির ধারাবাহিকতায় মন্দা দেখা দেয়ায় বিস্মিত হয়েছেন বিশ্লেষকরা।

তারা সেলফোন বিক্রির পরিমাণ কমার পেছনে বেশকিছু কারণকে দায়ী করেছেন। যার অন্যতম হলো সেলফোনের নতুন প্রযুক্তির অভাব।

এছাড়া অন্য কারণের কথা উল্লেখ করে সাইবার মিডিয়ার টেলিকম রিসার্চ বিভাগের প্রধান বিশ্লেষক ফায়সাল কাউসা বলেছেন, ২০১৪ সালের শেষ প্রান্তিকে বেশকিছু নতুন ডিভাইসের ঘোষণা এসেছে। বিশাল বাজারটিতে নাম লিখিয়েছে একাধিক কোম্পানি। কিন্তু চলতি বছরে এখনো অভিনব কোনো ঘোষণা আসেনি। সেলফোনে নতুনত্ব না থাকলে ক্রেতারাও এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।

তার মতে, ভারতে শুল্ক জটিলতায়ও সেলফোন বিক্রি কমেছে। এছাড়া বছরের প্রথম প্রান্তিকে চীনা নববর্ষে সেখানকার ক্রেতা আকর্ষণে ব্যস্ত ছিল নির্মাতারা। নববর্ষ উপলক্ষে চীনে দীর্ঘদিন ধরে নানা অফার চলে। এতে ভারতের মতো দেশে সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়। কেননা প্রায় সব ধরনের সেলফোনই এখন চীনে উৎপাদিত হয়।

দেশেই সেলফোন উৎপাদনে কোম্পানিগুলোকে আগ্রহী করতে ভারত সরকারের নেয়া উদ্যোগের প্রভাবেও সেলফোন বিক্রি কমেছে। সরকার ভারতে আমদানি করা হ্যান্ডসেটের ওপর শুল্ক ৬ থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সব ধরনের সেলফোনের দাম প্রায় ৪ শতাংশ বেড়ে গেছে।

চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিক্রি কমার পেছনে মূলত দুটি বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন বিশ্লেষকরা। প্রথমত- ব্র্যান্ডগুলোর অস্থিতিশীলতা এবং দ্বিতীয়ত- অনলাইন ‘ফ্ল্যাশ সেল’-এর জন্য ক্রেতাদের অপেক্ষা।

এ বিষয়ে বিশ্লেষক ফায়সাল কাউসা বলেন, ভারতে এখন ইন্টারনেট বিপ্লব ঘটেছে বলা যায়। ব্র্যান্ডগুলোকে তাই অনলাইনে ক্রেতা তৈরি করতে হবে। নতুন ধারায় বিপণনে এখনো শাওমিই এগিয়ে। এ পদ্ধতি ফলপ্রসূ প্রমাণিত হচ্ছে তুলনামূলক নতুন ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য।

তবে মাইক্রোম্যাক্স ও স্যামসাংয়ের মতো প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডগুলোকে প্রচলিত ধারায়ই আরো সক্রিয় হতে হবে বলে মনে করেন এ বিশ্লেষক।

এ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করে ভারতজুড়ে অসংখ্য বিক্রয়কেন্দ্র স্থাপন করেছে। কাজেই রাতারাতি এগুলো গুটিয়ে নেয়া অসম্ভব। বিক্রি বাড়াতে এসব স্থাপনার বিশাল নেটওয়ার্ক কাজে লাগাতে হবে মাইক্রোম্যাক্স ও স্যামসাংকে। শিগগিরই সেলফোন বিক্রিতে এ মন্দা কাটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বেশির ভাগ বিশ্লেষক।

এসকেডি/আরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।