রাষ্ট্রপতির গাড়িবহর থামিয়ে অ্যাম্বুলেন্সকে যেতে দিলেন তিনি
প্রধানমন্ত্রী কিংবা রাষ্ট্রপতির মতো ভিভিআইপিরা কোনো পথ দিয়ে যাওয়ার অন্তত কয়েক ঘণ্টা আগেই সাধারণের চলাচলের জন্য রাস্তা বন্ধ করে দেয়ার ঘটনা হরহামেশাই চোখে পড়ে। এতে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি রোগীরাও ভয়াবহ কষ্টের মধ্যে আটকা পড়েন। এতে আইন- শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রচুর তৎপরতা থাকে।
কিন্তু ব্যতিক্রমী এক ঘটনা ঘটেছে ভারতে। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে আগে যাওয়ার রাস্তা করে দিতে দেশটির রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির গাড়িবহর থামিয়ে দিলেন বেঙ্গালুরু প্রদেশের পুলিশের এক উপ-পরিদর্শক।
গত শনিবার এমএল নিজলিঙ্গাপ্পা নামে ওই পুলিশকর্মী তথ্যপ্রযুক্তি নগরীর ট্রিনিটি সার্কেল এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেদিনই রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বেঙ্গালুরুতে মেট্রোর গ্রিন লাইনের উদ্বোধনের জন্য যান।
রাষ্ট্রপতি মুখার্জি ট্রিনিটি সার্কেল হয়ে অনুষ্ঠানস্থলে যাওয়ার কথা ছিল। আর এ পথে যান চলাচল পুরোপুরি স্বাভাবিক রাখার দায়িত্ব ছিল নিজলিঙ্গাপ্পার। সেটা মাথায় রেখেই কাজ করছিলেন তিনি। রাষ্ট্রপতির গাড়িবহর যখন রাজভবনের দিকে এগোচ্ছিল, নিজলিঙ্গাপ্পার নজরে পড়ে, অ্যাম্বুলেন্সটি গাড়ির ভিড়ে আটকে রয়েছে।
রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সটি হিন্দুস্তান এয়ারোনটিক্স লিমিটেড (হ্য়াল)-এর কাছের একটি বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছিল। সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করেননি পুলিশের ওই কর্মকর্তা। মানবিকতার খাতিরে রাষ্ট্রপতির গাড়িবহর আটকে রেখে আগে অ্যাম্বুলেন্সকে চলে যাওয়ার অনুমতি দেন তিনি।
পরে দেশটির একটি দৈনিককে দেয়া সাক্ষাৎকারে এসআই নিজলিঙ্গাপ্পা বলেন, ইমার্জেন্সি কেস, তাই ওপর মহলের কর্তাদের জানিয়ে আগে চলে যেতে দিয়েছিলাম ওই অ্যাম্বুলেন্সকে। হাতে যথেষ্ট সময় ছিল, রাস্তায়ও জায়গা ছিল যথেষ্ট। ঠিক করি, রাষ্ট্রপতির গাড়িবহরের আগে অ্যাম্বুলেন্সকে যেতে দেব।
এরপর যা হলো, সেটাও কম বিস্ময়কর নয়। বেঙ্গালুরু পুলিশ নিজলিঙ্গাপ্পার পরিস্থিতি দ্রুত বিচার করে অ্যাম্বুলেন্সটিকে আগে ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করে তাকে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারাও নিজলিঙ্গাপ্পার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারেও বাহবা পাচ্ছেন তিনি। পুলিশ কমিশনার প্রবীণ সুদ টুইট করে বলেন, ওয়েল ডান। ওই পুলিশকর্মীকে এমন পদক্ষেপের জন্য পুরস্কৃত করা উচিত।
সূত্র : এবিপি আনন্দ।
এসআইএস/আরআইপি