আগুন-হামলায় কোণঠাসা মে
লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর তাৎক্ষণিক ভাবে হতাহতদের কাছে যাননি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। শুধু এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায়ই নয় বরং লন্ডন ব্রিজে হামলার পর থেরেসা মের কাজেও চটেছেন ব্রিটেনবাসী।
নানা দিক থেকে তাই ক্ষোভের মুখে পড়েছেন মে। গ্রেনফেল টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডের পরে মে দুর্গতদের কাছে পৌঁছাতে সময় নিয়েছিলেন। এ নিয়ে সাধারণ জনগণের একটি বড় অংশ চূড়ান্ত অসন্তুষ্টও হয়েছে। ক্ষোভের বহর এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কেনসিংটনে একটি গির্জায় আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে মে’কে পুলিশ প্রহারায় বের করে আনতে হয়েছিল।
উপস্থিতদের মধ্যে অনেকেই তার বিরুদ্ধে চেচিয়ে আজেবাজে কথা বলতে থাকেন। অ্যালিসন মোজেস নামে ৫৭ বছরের এক নারী ড্রেসিং গাউনে নেমে এসেছিলেন গ্রেনফেল টাওয়ার থেকে। তিনি গির্জার সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘ওকে জিজ্ঞেস করতে চাই, যারা আশ্রয়হীন, তাদের কাছে পৌঁছতে তিন দিন পেরিয়ে গেল কেন?’
অনেকেই আবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের বাইরে দাঁড়িয়ে মে’র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন। গতকাল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ তার জন্মদিনে কোনো রকম উৎসব অনুষ্ঠান থেকে দূরে রেখেছেন নিজেকে। এর আগেও তিনি আক্রান্তদের কাছে গিয়েছিলেন। তখনই এ ব্যাপারে থেরেসা মের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।
অবশেষে গ্রেনফেল টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডে নিজের ভূমিকার জন্য গতকাল রাতে ক্ষমা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মে। তিনি বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকার জন্য যতটুকু করার দরকার ছিল তা তিনি করে উঠতে পারেননি।
প্রথমে নির্বাচনে ভরাডুবি। এ নিয়ে সরকার গঠনে হিমশিম খাচ্ছেন মে। এর পরে আবার গ্রেনফেল টাওয়ার অগ্নিকাণ্ডে যথাযথ ভূমিকা পালন না করা; সব মিলিয়ে খুবই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন মে। তাই বেশ কিছু দিন ধরেই কনজারভেটিভ দলের অন্দরে নতুন নেতৃত্বের দাবি উঠেছে। থেরেসাকে সরাতে অন্তত ১২ জন এমপি লিখিত দাবি জানিয়েছেন বলে একটি ব্রিটিশ দৈনিকের খবরে জানানো হয়েছে।
তাদের দাবি, আগামী সপ্তাহেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে কিনা তা নিয়ে আলোচনা চলছে। এক প্রাক্তন মন্ত্রী ওই বলেছেন, ‘নিজের দিকে সহানুভূতি টানার চেষ্টা না করে তার এখন উচিত কোমর বেঁধে নেমে পরিস্থিতি সামলানো। যদি সেটা না পারেন তবে তার সরে যাওয়াই উচিত।’
ইতিমধ্যেই ১২ জন এমপি তার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। সংখ্যাটা আরও বাড়লে থেরেসার বিদায় নিশ্চিত। সে ক্ষেত্রে ব্রিটেন ফের আরও একটি নির্বাচনের পথে হাঁটবে।
এদিকে, স্থানীয় সময় রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে লন্ডনের ফিন্সবারি পার্ক নামের একটি মসজিদের কাছে গাড়ি হামলায় একজন নিহত এবং আরো আটজন আহত হয়েছে। দেখা যাক এই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেন মে। স্বাভাবিকভাবেই একের পর এক দুর্ঘটনায় মের টানাপড়েন অবস্থা।
টিটিএন/পিআর