মুম্বাই বিস্ফোরণ মামলায় ছয়জন দোষী সাব্যস্ত
ভারতের মুম্বাইয়ের ১৯৯৩ সালের সিরিজ বোমা বিস্ফোরণ মামলায় ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন মুম্বাইয়ের একটি আদালত। ছয়জনের মধ্যে মাফিয়া ডন দাউদ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ আবু সালেমও রয়েছেন। যিনি বিস্ফোরণের পর ভারত ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে পর্তুগাল সরকার তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করে।
১৯৯৩ সালের ১২ মার্চ ধারাবাহিকভাবে ১৩টি বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে ভারতের বাণিজ্য নগরী মুম্বাই। বিস্ফোরণে ২৫৭ জনের প্রাণহানি ঘটে। এতে গুরুতর আহত হন আরো ৭১৩ জন। অভিযোগ ওঠে, বাবরি মসজিদ ভাঙার বদলা নিতেই মুম্বাইয়ে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল।
বাবরি মসজিদ ভাঙা হয় ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর। ১৯৯৩ সালের জানুয়ারিতে দাঙ্গা-হানাহানিতে নয়শ জনের প্রাণহানি ঘটে। ১৯৯৩ সালে মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ, এয়ার ইন্ডিয়ার কার্যালয় ও অত্যাধুনিক হোটেলসহ বিভিন্নস্থানে ১৩টি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
বোমা হামলার দুই যুগ পর শুক্রবার আদালত এই রায় ঘোষণা করে। ২০০৩ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে এ হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়। সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি শুরু হয় ২০১১ সালের ১ নভেম্বর। শুক্রবার সেই মামলার রায়ে ছয়জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
দোষী সাব্যস্ত ছয়জনের মধ্যে আবু সালেম, মুস্তফা দোসা, ফিরোজ খান, তাহির মার্চেন্ট ও করিমুল্লা শেখ সক্রিয়ভাবে ২৪ বছর আগের সেই ভয়াবহ বিস্ফোরণকাণ্ডের ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন। ২০১৫ সালেই আবু সালেমের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। শুক্রবার একজনকে খালাস দিয়েছে আদালত। সাজা ঘোষণার জন্য শুনানি শুরু হবে সোমবার।
হামলার জন্য পাকিস্তান থেকে ভারতে বিস্ফোরক পাঠিয়েছিলেন দাউদ ইব্রাহিম ও আবু সালেম। এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত দাউদ ইব্রাহিম, টাইগার মেমন এবং তার ভাই ইয়াকুব মেমন এখনও পালিয়ে রয়েছেন।
১৯৯৩ সালের মুম্বাই হামলা ছাড়াও ভারতে বেশ কিছু ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। ২০০৩ সালের আগস্টে চারটি বোমা হামলায় ৫২ জনের প্রাণহানি ঘটে। ২০০৬ সালের জুলাইয়ে ১১ মিনিটের মধ্যে ট্রেনের ভিড়ে সাতটি বোমা বিস্ফোরণে ১৮০ জন নিহত এবং আহত হন আরও শতাধিক।
২০০৮ সালের নভেম্বরে বন্দুকধারীরা সাতটি ভিআইপি জোনে হামলা চালিয়ে ১৬৫ জনকে হত্যা করেছিল। এর মধ্যে দুটি অত্যাধুনিক হোটেল, শহরের প্রধান কমিউটার ট্রেন স্টেশন, হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট ও ইহুদি কেন্দ্রও ছিল। ২০১১ সালের জুলাইয়ের এক সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পরপর তিনটি বিস্ফোরণে ১৮ জন নিহত এবং ১৩১ জন আহত হয়।
সূত্র : বিবিসি
কেএ/এসআইএস/পিআর