অর্থাভাবে অ্যাম্বুলেন্স না পেয়ে মোটরসাইকেলে মরদেহ বহন


প্রকাশিত: ১০:১৮ পিএম, ০৪ জুন ২০১৭

হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ শঙ্কর শাহর স্ত্রী। কিন্তু মৃত্যুযন্ত্রণার যেন শেষ নেই তার। স্ত্রীর মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যাবেন সে সঙ্গতি নেই শঙ্করের।

হাসপাতাল থেকে বাড়ি পর্যন্ত মরদেহ নিয়ে যেতে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া আড়াই হাজার টাকা। কিন্তু তা দেবার সামর্থ নেই তার। ফলে অপারগ হয়ে মোটরসাইকেলে মৃত স্ত্রীকে বসিয়ে কোনোরকমে আঁকড়ে ধরে ফিরলেন বাড়ি।

গত শুক্রবার আলোচিত এ ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যের পূর্ণিয়ার জেলা সদর হাসপাতালে।

বৃদ্ধ শঙ্কর শাহ বলেন, ‘স্ত্রীর মৃত্যুর পর যখন তার দেহ বাড়ি নিয়ে যেতে বলা হল, আমি হাসপাতালের কর্মীদের অনুরোধ করি একটা গাড়ির ব্যবস্থা করে দিতে। কিন্তু ওরা আমায় বলল, ওরা কোনো সাহায্য করতে পারবে না, যা করার নিজেকেই করতে হবে। এরপর অ্যাম্বুলেন্স চালককে মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলে চালক ২৫০০ টাকা ভাড়া দাবি করেন। অনেক অনুরোধেও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত কোনো উপায় না দেখে ছেলে পাপ্পুর মোটরসাইকেলে বসিয়েই স্ত্রীর মরদেহ বাড়ি নিয়ে আসতে বাধ্য হই।’

তবে এই ঘটনাকে মিথ্যা বলে দাবি করেছে পূর্ণিয়া জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার সময় হাসপাতালে কোনো অ্যাম্বুলেন্স ছিল না। আর যে অ্যাম্বুলেন্সের কথা বলা হচ্ছে সেটিও অকেজো।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি অস্বীকার করে এড়িয়ে গেলেও প্রায়ই রাজ্যে এমন ঘটনা ঘটছে।

এ ঘটনার দুইদিন আগে মুজাফফরপুরের শ্রীকৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য একটি মরদেহ ময়লার গাড়িতে করে ঠেলে নিয়ে যাওয়ার মতো ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।

তার আগে গত মার্চে মুজাফ্ফরপুরের জেলা সদর হাসপাতালে মরদেহ বহনের এমন অমানবিক ঘটনা ঘটে। সেবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো সাহায্য না পেয়ে মৃতের পরিজনরা প্রথমে প্রায় ৫০০ মিটার পথ দেহ কাঁধে নিয়ে হেঁটে বড় রাস্তায় পৌঁছান। পরে সেখান থেকে একটা অটো জোগাড় করে কোনোমতে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যায়।

বারবার এমন ঘটনা ঘটলেও এতে কোনো পরিবর্তন আসেনি বিহারে। শঙ্করের স্ত্রীর মরদেহ বহনের ঘটনা বিহারের জনদুর্ভোগকে আবারও সামনে নিয়ে এলো।

এসআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।