জনপ্রিয় হচ্ছে মিষ্টি মরিচের চাষ
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের নরসিংদী শিবপুর আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের গাছে গাছে ঝুলছে মিষ্টি মরিচ। বিশ্বজুড়েই রয়েছে ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচের খ্যাতি। আমাদের দেশেও এই মরিচের জনপ্রিয়তা বাড়ছে দিন দিন। সম্ভাবনাময় মিষ্টি মরিচ পরীক্ষামূলক চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের নরসিংদী শিবপুর আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা। সংশ্লিষ্ট গবেষকরা জানান, শিগগিরই তা কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেয়া হবে।
জানা যায়, এই মিষ্টি মরিচের উৎপত্তি স্থান ব্রাজিল। বিশ্বে টমেটোর পর দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে মিষ্টি মরিচ। বাংলাদেশে মিষ্টি মরিচ সাধারণত `ক্যাপসিকাম` নামে সর্বাধিক পরিচিত। মিষ্টি মরিচের ফলের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার এবং ত্বক পুরু হয়। মিষ্টি মরিচ শুধু সবজি হিসেবেই নয়, এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, প্রোটিন ও ক্যান্সার প্রতিরোধক জিন থাকায় এটি মানুষের ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করতে সহায়ক।
মানসম্মত মিষ্টি মরিচ উৎপাদনের জন্য ১৬ থেকে ২৫ ডিগ্রি সেন্টিমিটার তাপমাত্রা ও শুষ্ক পরিবেশ সবচেয়ে উপযোগী। পলিথিন ছাউনি, পলি হাউস, পলি ভিনাল হাউসে গাছ লাগালে গাছের বর্ধন ও ফলন আশানুরূপ হয়। আশ্বিন (অক্টোবর) মাসে বীজ বপন করে কার্তিক (নভেম্বর) মাসে চারা রোপণ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। মার্চ ও এপ্রিলে গাছ থেকে ফলন পাওয়া যায়।
কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে সবজি চাষের এলাকায় চাষাবাদের উপযোগী বারি মিষ্টি মরিচ-১ উদ্ভাবন করেছে। এ বছর নরসিংদীর শিবপুর আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের গবেষকরা পরীক্ষামূলক মিষ্টি মরিচ চাষে সফলতা পেয়েছেন। গবেষকরা জানান, এই জেলায় মিষ্টি মরিচ চাষে অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে মিষ্টি মরিচের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা। কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এ কে এম আরিফুল হক জাগো নিউজকে বলেন, এক বিঘা জমিতে মিষ্টি মরিচ চাষ করতে খরচ হয় মাত্র ৫৫ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ছয় হাজার গাছ লাগানো যায়। প্রতি গাছে গড়ে সাতটি করে ফল আসে। যার বাজার মূল্য প্রায় চার লাখ ২০ হাজার টাকা। গবেষণা কেন্দ্রের এই সাফল্য কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. নাজিরুল ইসলাম বলেন, মিষ্টি মরিচের ফলন ও বাজারদর ভালো হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
এমজেড/এমএস