টাইগারদেরকে ভয় পাচ্ছে ভারত!


প্রকাশিত: ০৩:০০ এএম, ১২ মে ২০১৫

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে দুই আম্পায়ার পক্ষপাতিত্ব করে ভারতের জয় নিশ্চিত করেন এ অভিযোগ অনেকেরই। কোয়ার্টার ফাইনালে ভারতের জয় নিয়ে বাংলাদেশে সমালোচনার ঢেউ বয়ে যায়। এরপর ফাইনালে আইসিসির সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামালকে পুরস্কার বিতরণ করতে দেওয়া হয়নি। আর এ ষড়যন্ত্র করেন আইসিসির চেয়ারম্যান ভারতের শ্রীনিবাসন। পরবর্তীতে রাগে ও ক্ষোভে আইসিসির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন মুস্তফা কামাল।

স্বাভাবিকভাবে ভারতের ওপর ক্ষুব্ধ বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। এতে করে শঙ্কা ছিল জুনে ধোনিরা বাংলাদেশ সফরে আসবেন কিনা? এ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়াগুলোও সংশয় প্রকাশ করেছিল। না, সব সংশয়ের অবসান ঘটেছে। তিনটি ওয়ানডে ও ১টি টেস্ট খেলতে ৭ জুন ভারতীয় ক্রিকেট দল ঢাকা সফরে আসছে।

আগেও ভারত বাংলাদেশে খেলে গেছে। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট পুরোপুরি ভিন্ন। কেননা কোয়ার্টার ফাইনালে বিতর্কিত হারের বেদনা বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা এখনো ভুলতে পারেননি। বাংলাদেশের সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন বিলীন করে দিয়েছেন দুই আম্পায়ার। এই ক্ষোভে প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছে গোটা দেশ। তাই এবারে সিরিজকে ঘিরে উত্তেজনার শেষ থাকবে না।

কথা হচ্ছে ভারত পূর্ণ শক্তি নিয়ে ঢাকা সফরে আসছে কিনা। কেননা বাংলাদেশকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বাংলাদেশে ভারতের মূল ক্রিকেটাররা সাধারণত আসেন না। গতবার খুবই দুর্বল দল পাঠিয়েছিল। যদিও সিরিজ তারাই জিতে নিয়েছিল। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠেছে ভারতের দলে ধোনি, কোহলি, রোহিতদের দেখা মিলবে কি? যদিও ভারত বা বাংলাদেশ সিরিজে ক্রিকেটারদের নাম ঘোষণা করেনি। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের যে পারফরম্যান্স তাতে ভারত দুর্বল দল পাঠাবে বলে মনে হয় না। বলা যায় বাংলাদেশকে গুরুত্ব দিয়েই ভারত এবার সেরা দলই পাঠাবে।

ওয়ানডে ক্রিকেটে হোয়াইটওয়াশ ও একমাত্র টি-২০ ম্যাচেও পাকিস্তানকে নিয়ে ছেলেখেলা খেলেছে বাংলাদেশ। এই ফলাফল দেখে ভারতের মিডিয়াও ভারতীয় ক্রিকেট দলকে সতর্ক করে দিয়েছে। কলকাতা থেকে প্রকাশিত শীর্ষস্থানীয় এক দৈনিক উল্লেখ করেছে পাকিস্তান দল হিসেবে ততটা শক্তিশালী ছিল না ঠিকই। কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিটি ম্যাচ সত্যিকারে টাইগার রূপ ধারণ করে জয় পেয়েছে। ব্যাট, বল ও ফিল্ডিং তিন ডিপার্টমেন্টেই বাংলাদেশ সমান শক্তিশালী।

বিশ্বকাপ থেকে মাশরাফিরা যে খেলা খেলছেন তাতে পাকিস্তান কেন, এই অবস্থায় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর সামর্থ্য রাখে। সুতরাং সামনে সিরিজটা ভারতের জন্য খুবই কঠিন হবে। তাছাড়া কোয়ার্টার ফাইনাল হেরে মাশরাফিদের ভিতর আলাদা জেদ কাজ করছে। প্রথম অবস্থায় ভারত নাকি চাচ্ছিল না বাংলাদেশে আসতে। কিন্তু ডাল মিঞার হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত সফর চূড়ান্ত করেছে। ডাল মিঞা চান ক্রিকেটে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন। সফর বাতিল হলে দুই দেশের সম্পর্কের দূরত্ব বেড়ে যেত। যাক সফরে আসছে ঠিকই। কিন্তু পাকিস্তানের মতো মান সম্মান না ধুলোয় মিশে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। সেই দিন আর নেই যে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ মানেই ভারতের জয়। ওয়ানডে বা টেস্ট দুটো সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে ভারত এটা ধরে নিয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি বর্তমানে মাশরাফিদের যে পারফরম্যান্স তাতে ভারত কিছুটা হলেও ভয়ে আছে।

সিরিজ হার নয় তাদের ভিতর হোয়াইটওয়াশের শঙ্কাও পেয়ে বসেছে। সুতরাং আগে যাই হোক না কেন, এবার আর দুর্বল দল নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইবে না ভারত। ভারতের অনেক খ্যাতনামা ক্রিকেটার এখনই ধোনিদের সতর্ক করে বলছেন, টাইগারদের সঙ্গে লড়তে হবে। এ ক্ষেত্রে তিন ডিপার্টমেন্টেই সেরা পারফরম্যান্স শো করতে হবে। নচেৎ পরিণতি পাকিস্তানের মতো করুণ হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।