ওয়াশিংটন পোস্টে বাংলাদেশের ইটভাটা শ্রমিকদের দুঃখগাথা

বুলবুল আহমেদ
বুলবুল আহমেদ বুলবুল আহমেদ , সংবাদকর্মী
প্রকাশিত: ০৩:০৯ পিএম, ১১ মে ২০১৫

ক্রমবর্ধমান নগরায়নের দিকে ধাবিত হচ্ছে বাংলাদেশ। গ্রামাঞ্চল পরিণত হচ্ছে ইট-সুরকি-চুনের শহরে। আর এ সকল কাজে রয়েছে ইটভাটার শ্রমিকদের হারভাঙা খাটুনি। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় বাংলাদেশের ইটভাটা ও ইটভাটার শ্রমিকদের করুণ কাহিনী নিয়ে একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ইটভাটা ও শ্রমিকদের আদি-অন্ত।



প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে প্রায় ১১ হাজার ইটভাটার ক্ষেত্র রয়েছে। মৌসুমভিত্তিক এ কাজে শ্রমিকদের কঠিন শর্তে কাজ করতে বাধ্য করে মালিক পক্ষ। এসব ইটভাটায় যে সকল শ্রমিক (নারী ও পুরুষ) কাজ করেন তাদের মজুরিও অনেক কম। তাছাড়া এদেশে প্রায় দেড়শো বছর আগের প্রযুক্তিতেই কাজ করতে হয় তাদের।



বাংলাদেশের ইট তৈরির প্রযুক্তি সেকেলে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথমে মাটি সংগ্রহ করতে হয়। তারপর সেগুলোকে পানির সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে হাতের সাহায্যে মল্ড তৈরি করে রোদে শুকাতে হয়। পরে শুকানো হয়ে গেলে চূড়ান্তভাবে চূল্লিতে পোড়ানো হয়।



বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদফতরের বরাদ দিয়ে পত্রিকাটিতে বলা হয়েছে, প্রতিবছর প্রায় চার হাজার চুল্লিতে দুই মিলিয়ন টন কয়লা এবং দুই মিলিয়ন টন জ্বালানি কাঠ পোড়ানো হয়। এছাড়া সাম্প্রতিক একটি জরিপে জানা যায়, বায়ুদূষণে ১৩২টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩১তম যা এদেশের সাধারণ জনগণের বিরাট স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হিসেবে চিহ্নিত।



আর অধিকাংশ ইটভাটা পরিবেশ অধিফতরের নাকের ডগায় গড়ে উঠেছে অথবা এদের বেশির ভাগেরই পরিবেশ ছাড়পত্র নেই বলে উল্লেখ করা হয়। শ্রমিকরা এতে যথেষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। কৃষকরা তাদের জমি হারাচ্ছেন। মাটি ও পানি দূষিত হচ্ছে।



এছাড়া ভাটার কালো ধোঁয়া পরিবেশ ও কৃষি ফসলের মারাত্মক ক্ষতি করছে। প্রতিবছর দেশের মোট চাহিদার ২৫ থেকে ২৬ শতাংশ জ্বালানি কাঠ ইটভাটাগুলোতে ব্যবহার করার ফলে ব্যাপকহারে বন-জঙ্গলও উজার হচ্ছে।

বিএ/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।