দিনে পিএইচডি ডিগ্রির পড়াশোনা, রাতে হোটেলে কাজ করেন স্নেহা


প্রকাশিত: ০৩:৪০ পিএম, ২৭ মে ২০১৭

নিয়ম করে প্রত্যেকদিন ভোরে ঘুম থেকে ওঠা। কাকভোর থেকে শুরু হয় পড়াশোনা। সকাল গড়িয়ে সূর্য ওঠে মাথার উপর। বইপত্র ছেড়ে ওঠেন স্নেহা লিম্বগাওমকরও। লেগে পড়েন ময়দা মাখা, তরকারি কাটা থেকে শুরু করে মশলা বাটার কাজে। শেষ নয় এখানেই; সন্ধ্যা নামে।

প্রতিদিন সন্ধ্যায় ভারতের কেরালার কারিয়াভাত্তোমে টেকনোপার্কের কাছেই রাস্তার উপরেই স্বামী প্রেমশঙ্কর মান্ডালের অস্থায়ী খাবারের দোকানে পৌঁছে যান স্নেহা। গভীর রাত পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রী মিলে লেগে থাকেন ওমলেট, পরোটা, দোসা তৈরিতে। রাতে দোকান বন্ধ করে ফের বাড়ি ফিরে পড়াশোনা। এভাবেই চলে সারাটা দিন। ভোর থেকে রাত অবধি অমানসিক ধকল গেলেও সোনালি স্বপ্নের জাল বুনা থমকে দাঁড়ায় না।

মনের ভেতরে এক অদম্য জেদ। যে করেই হোক শেষ করতে হবে পিএইচডি-র পড়াশোনা। এজন্যই সকালে পড়াশোনা করে রাতে স্বামীর সঙ্গে পরোটা বিক্রি করেন মহারাষ্ট্রের স্নেহা লিম্বগাওমকর।

সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট অরকুটে প্রথম আলাপ। সেখানে থেকেই প্রেম। কিন্ত বাধ সাধেন স্নেহার বাবা-মা। পছন্দ নয় পাত্র। বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে ভালোবাসার মানুষকে বিয়ে করেন স্নেহা। কিন্তু পড়াশোনাটা কোনোভাবেই ছাড়তে চাননি স্নেহা। ডক্টরাল রিসার্চ ফেলোশিপ নিয়ে চলে আসেন কেরালা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে।

তখন ক্যাগ(সিএজি)-এ চাকরি করতেন প্রেমশঙ্কর। স্নেহা থাকতে শুরু করেছেন দিল্লিতে। সেই অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে দিল্লির সেই কাজ ছেড়ে কেরালা চলে আসেন প্রেমশঙ্কর। কোনও কাজ নেই। কিন্তু স্নেহার স্কলারশিপের টাকায় পড়াশোনা এবং সংসার চালানো দায়।

এমন অবস্থায় স্বামী-স্ত্রী দু’জনে মিলে শুরু করেন এই ছোট্ট ব্যবসা। এখন তাদের লক্ষ্য পিএইচডি শেষ করে জার্মানি পাড়ি দেয়া। ভবিষ্যতে নিজের রেস্তোরাঁ খোলারও স্বপ্ন দেখেন এই দম্পতি। প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যে পড়াশোনা শেষ করে দু’জনে মিলে চালান পরোটার দোকান।

অল্পদিনের মধ্যে স্নেহা-প্রেমশঙ্করের ছোট্ট খাবারের দোকান রীতিমতো হিট। তাদের দোকানের কোনও একজন ক্রেতা স্নেহা-প্রেমশঙ্করের এই কাহিনি ফেসবুক পোস্ট করে দেন। তারপর থেকে তাদের কঠিন লড়াই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রশংসা পায়। আনন্দবাজার।

এসআইএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।